বাংলাদেশের সেরা ১০টি কীটনাশক কোম্পানির তালিকা গুলো জেনে নিন

 আমাদের অনেক কৃষক বাংলাদেশের সেরা ১০টি কীটনাশক কোম্পানির তালিকা সম্পর্কে জানেনা। যার কারণে তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কোম্পানির নিম্নমানের পণ্য ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। তাই চলুন বাংলাদেশের গুনগতমান ও সেবার দিকে থেকে সেরা ১০ টি কীটনাশক কোম্পানি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

বাংলাদেশের সেরা ১০টি কীটনাশক কোম্পানির তালিকা
এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা আরো জানতে পারবেন, মাজরা পোকার জন্য কোন কীটনাশক সবচেয়ে ভালো,সবচেয়ে শক্তিশালী কীটনাশক কোনটি, কীটনাশক কি মানুষের জন্য ক্ষতিকর, সবচেয়ে জনপ্রিয় কীটনাশক কোনটি এরকম বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। তাই ভালোভাবে বোঝার জন্য আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

পোস্ট সূচীপত্রঃ বাংলাদেশের সেরা ১০টি কীটনাশক কোম্পানির তালিকা

বাংলাদেশের সেরা ১০টি কীটনাশক কোম্পানির তালিকা

আপনারা অনেকেই বাংলাদেশের সেরা ১০টি কীটনাশক কোম্পানির তালিকা সম্পর্কে জানতে চান।চলুন এই বিষয়ে সংক্ষেপে সঠিক তথ্য জেনে নেওয়া যাক। বর্তমানে বাংলাদেশে রেজিস্ট্রেশনকৃত প্রায় ৭৫০ টি কীটনাশক কোম্পানি আছে। এদের মধ্যে কোন ১০ টি কীটনাশক কোম্পানি বাংলাদেশের বাজারে সবচেয়ে ভালো অবস্থান করছে এই বিষয়টা অনেকেরই অজানা। আমার দেশের বাজারে যেসব কোম্পানি সেরা দশের মধ্যে আছে তাদের সম্পর্কে চলুন সঠিক তথ্য জেনে নেওয়া যাক। 

বাংলাদেশের সেরা ১০টি কীটনাশক কোম্পানির তালিকা সমুহঃ
১. সিনজেনটা বাংলাদেশ লিমিটেডঃ 
বিগত ৫০ বছর ধরে অত্যন্ত বিশ্বস্ততার সহীত বাংলাদেশে ব্যবসা করে আসছেন সিনজেনটা কোম্পানি।বর্তমানে বাংলাদেশে বিক্রয়ের দিক থেকে এবং সেবার দিক থেকে এক নম্বর স্থানে অবস্থান করছেন এই কোম্পানিটি। বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা জন্য সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করে থাকেন সিনজেনটা বাংলাদেশ লিমিটেড। এই কোম্পানিটি বাংলাদেশের কৃষকদের ফসলের ফলন, উৎপাদন ও গুণগতমান বাড়াতে উন্নতমানের বীজ ও ফসল সুরক্ষায় সঠিক সমাধান দিয়ে আসছেন।

সিনজেনটা বাংলাদেশ লিমিটেড একটি যৌথ উদ্যোগ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। যেখানে ৬০% শেয়ার আছে সিনজেনটা এজি সুইজারল্যান্ডের ও ৪০% শেয়ার আছে বিসিআইসি (বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন) বাংলাদেশের। ঢাকার ধানমন্ডিতে সিনজেনটা বাংলাদেশ লিমিটেড এর প্রধান কার্যালয় অবস্থিত। বাংলাদেশের তিনটি বিভাগে এদের বিভাগীয় কার্যালয় আছে এছাড়াও ১১ টি আঞ্চলিক কার্যালয় আছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। চট্টগ্রামে একটি ফসল সুরক্ষা ফর্মুলেশন প্লান্ট আছে এই কোম্পানিটির।

এছাড়াও বগুড়া, যশোর, গাজীপুর ও চট্টগ্রামে চারটি সাইট অফিস বিদ্যমান আছে। সারা বাংলাদেশের সমস্ত কৃষক, রিটেইলার, পরিবেশক বা ডিলার ও কোম্পানির কর্মীদের আধুনিক কৃষি বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য বগুড়াতে একটি উন্নত মানের ট্রেনিং সেন্টার আছে। মূলত এটি একটি সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক কোম্পানি। ২০০০ সালে novertis agre business ও Astra Zeneca Agrocemiclas  এর একত্রি করনের মাধ্যমে সিনজেনটা কোম্পানির গঠিত হয়েছিল

১৯৭০ সালে Ciba & Geigy দুটি কোম্পানি একত্রিত হয়ে Ciba Geigy নামে আমাদের দেশে ব্যবসা শুরু করেন। মূলত এই কোম্পানিটি বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে সর্বপ্রথম কীটনাশক কোম্পানি হিসেবে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। এরপর আবারো Ciba Geigy স্যান্ডোজের সাথে একভূত হয়ে ১৯৯৬ সালে নোভারটিস নামক কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। এই নামে চার বছর চলার পরে আবার নোভারটিস ও অ্যাস্ট্রোজেনিকা কেমিক্যালস এর সাথে একভূত হয়ে ২০০০ সালে সিনজেনটা নামক কোম্পানিতে পরিণত হয়।

২. ইনতেফাঃ 
বাংলাদেশের প্রথম সারির যেসব কৃষি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান আছে তার মধ্যে ইন্তেফা অন্যতম একটি কোম্পানি। ২০০৪ সাল থেকে এই কোম্পানিটি যাত্রা শুরু করে ২০২৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশের কীটনাশকের বাজারে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে কোম্পানিটি। বর্তমানে বাংলাদেশে কীটনাশক বিক্রয়ের দিক থেকে এবং সেবার দিক থেকে এর অবস্থান দ্বিতীয়। কৃষকদেরকে মানসম্মত পণ্য সরবরাহ করে খুবই দ্রুত সফলতা অর্জন করেছে এই কোম্পানিটি।

ইন্তেফা কোম্পানির সারা বাংলাদেশে প্রায় ৮টি সেল সেন্টার আছে, সবগুলো সেল সেন্টার মিলে প্রায় ৮০ জন লজিস্টিক কর্মী চাকরি করছেন। সারা বাংলাদেশে প্রায় এক হাজার ডিলার, কয়েক হাজার রিটেইলার ও কৃষক পর্যায়ে সঠিক পরামর্শ দেওয়ার জন্য ৪৫০ জন বিক্রয় প্রতিনিধি নিরলস ভাবে কাজ করা যাচ্ছেন। পন্য সঠিকভাবে উৎপাদন ও প্যাকেজিং করার জন্য সাভারের আশুলিয়াতে একটি উন্নত মানের রিপ্যাকিং প্লান্ট রয়েছে।

কৃষকদের মাঝে গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য দেওয়ার জন্য এবং কৃষককে সঠিক পরামর্শ দেওয়ার জন্য মাত্র ২০ বছরে কোম্পানিটি বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের মন জয় করেছে। বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য সকল পর্যায়ে থেকে প্রায় এক হাজার মানুষ ইন্তেফা কোম্পানিতে কর্মরত আছেন।পরিবেশ রক্ষার জন্য ইতিমধ্যেই এই কোম্পানিটি জৈব বালাইনাশক সরবরাহ শুরু করেছেন। কৃষকের ফসল সঠিকভাবে চাষাবাদ ও ফলন বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত বিশস্ততার সহিত কাজ করে যাচ্ছেন ইন্তেফা কোম্পানি।

৩. বায়ার ক্রপ সাইন্সঃ 
বাংলাদেশের কীটনাশকের বাজারে বিক্রয় ও সেবার মানের দিক থেকে বায়ার কোম্পানির অবস্থান তৃতীয়। এটি একটি জার্মান কোম্পানি ১৮৬৩ সাল থেকে এই কোম্পানি যাত্রা শুরু।গবেষণা করে নিজেরাই পণ্য তৈরি করে এমন কোম্পানির মধ্যে বায়ার অন্যতম একটি কোম্পানি।বাংলাদেশের যেসব কীটনাশক কোম্পানি ব্যবসা করেন তাদের মধ্যে শুধুমাত্র বায়ার নিজস্ব পণ্য বিক্রয় করে। কৃষকদের মাঝে গুণগত মান সম্পন্ন পণ্য বিক্রয় করে বাংলাদেশে একটি ভালো অবস্থান তৈরি করেছেন।

ফসলের সুরক্ষায় ও খাদ্য নিরাপত্তায় অবদান রাখার জন্য নিত্যনতুন বিভিন্ন পণ্য আবিষ্কার ও উৎপাদন করে বিক্রয় করে থাকেন। সারা বাংলাদেশের কয়েক হাজার ডিলার নিয়োগ দেওয়া আছে। রিটেলার ও কৃষকদের মাঝে পন্য সরবরাহ ও সঠিক পরামর্শ প্রদানের জন্য প্রায় কয়েক হাজার মাঠকর্মী বায়ার কোম্পানিতে কর্মরত আছেন। এই কোম্পানিটি আমাদের দেশে প্রায় ২০ বছর থেকে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। বিভিন্ন ধরনের উন্নত মানের ছত্রাক নাশক নিয়মিত সরবরাহ করছেন এই কোম্পানিটি।

৪. অটো ক্রপ কেয়ারঃ  
বাংলাদেশের বাজারে কীটনাশক বিক্রয় ও সেবার মনের দিক থেকে চতুর্থ স্থানে অবস্থান করছেন অটো ক্রপ কেয়ার লিমিটেড। ১৯৬৫ সাল থেকে এই কোম্পানিটির যাত্রা শুরু। বিভিন্ন ধরনের গুণগত মান সম্পন্ন পন্য সরবরাহ করে কৃষকদের মনে ভালো একটা অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন। সারা বাংলাদেশের প্রায় কয়েক হাজার ডিলার, রিটেলার এর মাধ্যমে কৃষকদের হাতে গুণগত মান সম্পন্ন পণ্য তুলে দিচ্ছেন।

সারা বাংলাদেশের প্রায় ৮ হাজার কর্মী কৃষকদের সঠিক পরামর্শ দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এই কোম্পানিটি কীটনাশক সরবরাহ করার পাশাপাশি ভুট্টার বীজ সহ বিভিন্ন ফসলের বীজ সরবরাহ করে থাকেন। কৃষককে ভালো বীজ সরবরাহ, ফসল সুরক্ষায় পরামর্শ দিয়ে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন এই কোম্পানিটি। বীজ কীটনাশক সরবরাহের পাশাপাশি কৃষি কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে থাকেন।

৫. এ সি আইঃ  
বাংলাদেশের কীটনাশকের বাজারে পণ্য বিক্রয় পরিমাণ ও সেবার মানের দিক থেকে পঞ্চম স্থানে অবস্থান করছেন এসিআই কোম্পানী। ১৯৯৫ সালে কৃষি রাসায়নিক শিল্প হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এই কোম্পানিটি। ১৯৯৭ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করে এবং পণ্য বিক্রয় শুরু করেন। কৃষকদের মাঝে গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ করায় এই কোম্পানির মূল লক্ষ্য। গাজীপুরে প্রায় ৩৪ একর জমির উপর একটি ফ্যাক্টরি রয়েছে।

৬. মিমপেক্স এগ্রো কেমিক্যালঃ 
মিমপেক্স এগ্রো কেমিক্যাল বাংলাদেশের কীটনাশকের বাজারে প্রায় ১২ বছর ধরে পণ্য সরবরাহ করে আসছে। কৃষকের হাতে হাত রেখে কৃষি বালায় ব্যবস্থাপনার ওপরে কাজ করে যাচ্ছে। সারা বাংলাদেশের প্রায় ১০০০ ডিলার কয়েক হাজার রিটেইলার নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। কৃষকের ফসলের সুরক্ষার জন্য কয়েক হাজার মাঠকর্মী কৃষককে সঠিক পরামর্শ দিয়েছেন। নিত্যনতুন বিভিন্ন পণ্য নিয়মিত আমদানি করে খাদ্য নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখছেন।

৭. হেকেম বাংলাদেশ লিমিটেডঃ 
আধুনিক ও গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ করে বিক্রয় এবং সেবার দিক থেকে বাংলাদেশের কীটনাশকের বাজারে হেকেম কোম্পানির অবস্থান সপ্তম। প্রতিনিয়ত গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য কৃষকের হাতে তুলে দিয়ে নিরাপদ ফসল উত্তোলনের জন্য মুখ্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। সারা বাংলাদেশের প্রায় কয়েক হাজার ডিলার ও রিটেইলার এর মাধ্যমে কৃষকের হাতে পণ্য তুলে দিচ্ছেন। কয়েক হাজার কর্মী নিয়ে সারা বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। মূলত এটি একটি শ্রীলংকান কোম্পানি।

৮. পেট্রোকেম লিমিটেডঃ 
সঠিকভাবে ফসল উৎপাদন ও ফসলের নিরাপত্তার জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন পেট্রোকেম কম্পানি। গুণগত মানসম্পন্ন বীজ ও কীটনাশক সরবরাহ করে বাংলাদেশের কৃষকদের মনে ভালো একটি জায়গা করে নিয়েছেন পেট্রোকেম। সারা বাংলাদেশে কয়েক হাজার ডিলার ও রিটেলারের মাধ্যমে দীর্ঘ কয়েক বছর থেকে ব্যবসা পরিচালনা করেছেন। ১৯৯০ সাল থেকে ব্যবসা শুরু করে আজ পর্যন্ত খুব ভালোভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছেন।

৯. ম্যাকডোনাল কোম্পানি লিমিটেডঃ 
বাংলাদেশের কীটনাশকের বাজারে ব্যবসার পরিধি ও সেবার দিক থেকে ম্যাকডোনাল কোম্পানি লিমিটেড এর অবস্থান নবম। সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের উন্নত মানের বালাইনাশক সরবরাহ করে মোটামুটি একটি ভালো অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন। ম্যাকডোনাল কোম্পানি কৃষকদেরকে বিভিন্ন পরামর্শ ও সঠিক পণ্য দিয়ে ফসল উৎপাদনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে থাকে। সারা বাংলাদেশের কয়েক শত কর্মী, ডিলার ও রিটেলার নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছেন।

১০. সেমকো কোম্পানি লিমিটেডঃ 
১৯৭৪ সাল থেকে আমাদের দেশের সেমকো ব্যবসা পরিচালনা করেছেন। ব্যবসার পরিধি, বিক্রয় ও সেবার দিক থেকে দশম স্থানে অবস্থান করছেন। বিভিন্ন ধরনের উন্নত মানের ও গুণগত পণ্য সরবরাহ করে কৃষকদের আস্থার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছেন। সারা বাংলাদেশের কয়েক শত কর্মী, ডিলার, রিটেলার নিয়ে কৃষকদের মাঝে সঠিক পরামর্শ প্রদান করার মাধ্যমে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।

মাজরা পোকার জন্য কোন কীটনাশক সবচেয়ে ভালো

সাম্প্রতিক সময়ে মাজরা পোকা নিয়ে প্রত্যেকটা কৃষক বেশ চিন্তিত, তাই তারা জানতে চায় মাজরা পোকার জন্য কোন কীটনাশক সবচেয়ে ভালো। ধানের মাজরা পোকার জন্য বর্তমান সময়ে যে পণ্যটি সবচেয়ে বেশি কাজ করতেছে তা হলো নিউ শর্ট অথবা এইম গোল। এছাড়াও ধানের মাজরা পোকার জন্য ভিরতাকো, বাতির, রেড কার্ড এই পণ্যগুলো সবচেয়ে ভালো কাজ করে থাকে। তাই ধানের মাজরা দমন করার জন্য আপনি এই পণ্যগুলো ব্যবহার করতে পারেন।

সবচেয়ে শক্তিশালী কীটনাশক কোনটি

পণ্যর গুনগতমান ও সেবার দিক থেকে কোন কোম্পানি সবচেয়ে ভালো

আপনার অনেকেই জানতে চান পণ্যর গুনগতমান ও সেবার দিক থেকে কোন কোম্পানি সবচেয়ে ভালো,চলুন এই বিষয়ে সঠিক তথ্য জেনে নেওয়া যাক। বর্তমানে বাংলাদেশে দেশি ও আর্ন্তজাতিক কীটনাশক কোম্পানিগুলোর মধ্যে ইনতেফা পণ্যর গুনগতমান ও সেবার দিক থেকে কোন কোম্পানি সবচেয়ে ভালো বলে ধারনা করা যাচ্ছে। কারন গুনগত মানম্পন্ন পণ্য সরবরাহের পাশাপাশি তারা দেশে বিভিন্ন  ছোট ছোট অন্চল তৈরি করে সেখানে বেশি বেশি লোক নিয়োগের মাধ্যমে বেকার দূরিকরনে মূল্যবান ভুমিকা পালন করে আসছেন। 

সবচেয়ে শক্তিশালী কীটনাশক কোনটি

বর্তমানে আমাদের দেশে সবচেয়ে শক্তিশালী কীটনাশক কোনটি এ বিষয়টি অনেকেই জানতে চান। শক্তিশালী কীটনাশক বলতে যে কীটনাশক দিয়ে একই সঙ্গে বেশ কিছু পোকা মারা যায় সেসব কীটনাশক কে বোঝায়। যেমন ৫৫ ইসি, ল্যামডাসাইহ্যালোথ্রিন,ক্লোরোন্টোনিলিপ্রোল। এই কীটনাশক গুলো দিয়ে একই সঙ্গে অনেক ধরনের পোকা মারা যায়। তাই এসব কীটনাশককে শক্তিশালী কীটনাশক বলা যায়। এছাড়াও আরো এমন কিছু কীটনাশক আছে যেগুলো খুব দ্রুত পোকা দমনে সাহায্য করে।

সবচেয়ে জনপ্রিয় কীটনাশক কোনটি

আমাদের দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় কীটনাশক কোনটি চলুন জেনে নেওয়া যাক। বর্তমানে আমাদের দেশে উপরি পোকা দমন করার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় কীটনাশকের নাম হচ্ছে ডার্সবান ও বিভিন্ন ফসলের বিভিন্ন প্রকার দমন করার জন্য সেভিন। আবার মাজরা পোকা দমন করার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম হচ্ছে ভিরতাকো। বেগুনের পোকা দমন করার জন্য জনপ্রিয় একটি নাম হচ্ছে নেমা।বেগুন সহ অন্যান্য ফসলের সাদামাছি, জাব, জ্যাসিড,থ্রিপস পোকা দমন করার জন্য জনপ্রিয় এক নাম হচ্ছে উলালা।

সবচেয়ে বেশি কীটনাশক ব্যবহার হয় কোন দেশে

সারা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কিটনাশক ব্যবহার হয় কোন দেশে এই বিষয়টি আপনারা অনেকেই খুবই আগ্রহের সহিত জানতে চান। তথ্যসূত্র অনুযায়ী ২০২১ সালে সবচেয়ে বেশি কীটনাশক ব্যবহার হয়েছে ব্রাজিলে। যার পরিমাণ প্রায় ৭২০ কোটি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আমেরিকায় ব্যবহার হয়েছে যার পরিমাণ ৪৫৭ কোটি। এছাড়াও এশিয়া মহাদেশের মধ্যে চীন,ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা এই দেশগুলোতে সবচেয়ে বেশি কীটনাশক ব্যবহার হয়ে থাকে।
কীটনাশক কি মানুষের জন্য ক্ষতিকর

কীটনাশক কি মানুষের জন্য ক্ষতিকর

আপনারা অনেকেই জানতে চান কীটনাশক কি মানুষের জন্য ক্ষতিকর। অবশ্যই কীটনাশক মানুষের জন্য ক্ষতিকর। কারণ বর্তমানে আমাদের দেশের যে পরিমাণ কীটনাশক ব্যবহার হয়। ঐসব কীটনাশক বিভিন্ন ফসলের মধ্য দিয়ে মানুষের শরীরের প্রবেশ করে। যার কারণে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় যেমন হার্ট, কিডনি, লিভার, ত্বক ইত্যাদি। এছাড়াও এসব কীটনাশকের কিছু অংশ মানব শরীরে রয়ে যায়। যেগুলো পরবর্তীতে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি করে থাকে।

কার্বফুরান বাংলাদেশে নিষিদ্ধ কেন

আমাদের দেশের অনেক কৃষক জানতে চান কার্বোফুরান বাংলাদেশে নিষিদ্ধ কেন। বাংলাদেশের যেসব দানাদার কীটনাশক ব্যবহার হয় তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় কার্বোফুরান। এটি মানব দেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ বিকলাঙ্গ করতে দ্রুত সাহায্য করে কার্বোফুরান।তাই বাংলাদেশ সরকার কার্বোফুরান বিক্রয়ের উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে এই পণ্যটি আর পাওয়া যাচ্ছে না।

বাংলাদেশের সেরা ১০টি কীটনাশক কোম্পানির তালিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর


কীটনাশকের ১০টি ক্ষতিকর প্রভাব?
কীটনাশকের কারণে আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব দেখা যায়। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দশটি হল-কিডনি রোগ, ফুসকুড়ি, ফোসকা, অন্ধত্ব, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, হার্ট অ্যাটাক এরকম বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। এছাড়াও কীটনাশকের প্রভাব একজন মানুষের শরীরে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও বেশি বেড়ে যায়। তাই স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হলে কীটনাশক ব্যবহারের সময় অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে জেনে পরিমিত মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার করা হয়।

কীটনাশক ব্যবহারের ফলে কি কি ক্ষতি হয়?
কীটনাশক ব্যবহারের ফলে মানব দেহে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে। প্রাথমিক অবস্থায় শরীরে বিভিন্ন ধরনের ফুসকুড়ি বা চুলকানি দেখা যায়। পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে কিডনি রোগ, হার্ট এর রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, অন্ধত্ব, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ বিকলাঙ্গ এরকম বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হয়ে থাকে।তাই চেষ্টা করতে হবে কীটনাশক ব্যবহারের সময় সঠিকভাবে এবং পরিমিত মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহারের জন্য। এতে করে আমাদের শরীরের সমস্যাগুলো অনেক কম হবে।

কীটনাশক ব্যবহার ক্ষতিকর কেন?
কীটনাশক ব্যবহার ক্ষতিকর নয় যদি সেটি পরিমিত মাত্রায় ব্যবহার করা যায়। কিন্তু যদি প্রয়োজনে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করা হয় তাহলে সেটা পরিবেশ এবং মানুষের জন্য খুবই ক্ষতিকর। বিশেষ করে যেসব কীটনাশকের স্থায়িত্ব বেশি সেগুলো বেশি ক্ষতি করে। অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার ফলে মাটিতে এবং মাটির উপরে উপকারী প্রাণী মারা যায় যেমন সাপ, ব্যাঙ, কেঁচো, মাছ ইত্যাদি। মানুষের শরীরে প্রবেশ করে বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যাধি সৃষ্টি করে থাকে। 

কীটনাশক প্রতিরোধের উপায়?
কীটনাশক প্রতিরোধের একমাত্র উপায় হচ্ছে নিরাপদ মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার করা। যিনি ব্যবহার করবেন তিনি অবশ্যই নিয়ম মেনে কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে। যেমন কীটনাশক ব্যবহার করার সময় হাতের গ্লোভস, চোখে চশমা, মাথায় কাপড় বেঁধে, মুখে মাক্স পড়ে কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।কীটনাশকের বোতলের গায়ের লেখা দেখে সে অনুযায়ী কীটনাশক ব্যবহার করা। কীটনাশক ব্যবহার করার পর কমপক্ষে ৭ দিন ওই ফসল উত্তোলন না করা।

কীটনাশক খেলে কি শ্বাসকষ্ট হয়?
কীটনাশক ব্যবহার করার সময় অথবা কীটনাশক ব্যবহৃত সবজি ফল বা অন্যান্য খাবার খেলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরে অ্যালার্জি বেড়ে যায়। আর যাদের শ্বাসকষ্ট জনীত সমস্যা আছে তাদের শরীরে এলার্জি বেশি থাকে। তাই কীটনাশক শরীরে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। অর্থাৎ কীটনাশক খেলে শ্বাসকষ্ট হয়। তাই যাদের শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা আছে তা কীটনাশক ব্যবহারের সময় সঠিক নিয়ম মেনে ব্যবহার করবেন। এছাড়াও কীটনাশক ব্যবহৃত ফসল ভালো করে পরিষ্কার ও সিদ্ধ করে খাবেন।

শেষ কথাঃ বাংলাদেশের বাজারে সেরা ১০ টি কীটনাশক কোম্পানির তালিকা

তাহলে উপরের আলোচনা থেকে আপনারা জানতে পারলেন বাংলাদেশের বাজারে সেরা ১০ টি কীটনাশক কোম্পানির তালিকা সম্পর্কে। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত আমাদের দেশের প্রায় ৭৫০ টি কোম্পানি ব্যবসা করছেন। তাদের মধ্যে যারা নিয়মিত গুণগত মান সম্পন্ন পণ্য আমদানি করছেন এবং কৃষকদের সঠিক পরামর্শ প্রদান করছেন শুধুমাত্র তাদেরকেই এই তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে ৭৫০ টি কোম্পানির মধ্যে এই কোম্পানিগুলো মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

আমার দেশে প্রতিবছর কয়েক লক্ষ টন খাদ্য ঘাটতি দেখা যায়। তবে জনগণ যেভাবে বাড়ছে সেই তুলনায় খাদ্য ঘাটতি বাড়ছে না তার কারণ দিন দিন আমাদের দেশে ফসলের ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর পিছনে সবচেয়ে বেশি অবদান হচ্ছে কীটনাশক কোম্পানি এবং বীজ কোম্পানির, আর সরকারের অবদান তো আছেই। কীটনাশক ব্যবহার ছাড়া ফসল উৎপাদন বা ফলন বৃদ্ধি কোনভাবে সম্ভব নয়। তবে সেটা ব্যবহার করতে হবে পরিমিত মাত্রায়। কোনোভাবেই বেশি ব্যবহার করা যাবে না।

উপরের আলোচনা থেকে আপনারা আরো জানতে পারলেন, বাংলাদেশে কোন কীটনাশক সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী, সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় কীটনাশক কোনটি, মাজরা পোকার জন্য কোন কীটনাশক ভালো, কীটনাশক কি মানুষের জন্য ক্ষতিকর। আশা করি এই বিষয়গুলি আপনারা খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। আমাদের এই ওয়েবসাইটে নিয়মিত এরকম গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পাবলিশ করা হয়। তাই এরকম গুরুত্বপূর্ণ ও সঠিক তথ্য জানতে আমাদের সঙ্গে থাকুন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এট্রাকশন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url