বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুততম মাধ্যমে কোনটি

আমাদের দেশ থেকে যেসব প্রবাসী বাঙালি বিদেশে থাকেন, তারা বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুততম মাধ্যম কোনটি সম্পর্কে জানতে চান।কারণ প্রত্যেকটি মানুষই চায় তার পরিবার দ্রুত টাকা পাক। চলুন এ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুততম মাধ্যমে কোনটি
এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর সবচেয়ে নিরাপদ উপায় কোনটি ও বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে যাবতীয় সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।ভালোভাবে বোঝার জন্য এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুততম মাধ্যমে কোনটি

বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুততম মাধ্যমে কোনটি 

বেশিরভাগ প্রবাসী বাঙালি বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুততম মাধ্যমে কোনটি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে চান। কারন আমাদের দেশ থেকে প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণে মানুষ বিদেশে যায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করে, তাদের পরিবারের আর্থিক চাহিদা মেটানোর জন্য। তারা সবাই চায় কিভাবে দ্রুত পরিবারের নিকট টাকা পাঠানো যায়। এই জন্য তারা বিভিন্ন ধরনের মাধ্যম খুঁজে থাকেন। চলুক তাহলে জেনে নেওয়া যাক বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর সবচেয়ে দ্রুততম মাধ্যম কোনটি। 

বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুততম মাধ্যম গুলোঃ
১. বিকাশঃ বর্তমান সময়ে বিদেশ থেকে আমাদের দেশে টাকা পাঠানোর সবচেয়ে দ্রুততম মাধ্যম হচ্ছে বিকাশ। এটি ব্র্যাক ব্যাংকের একটি প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশ থেকে বিকাশের মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠানো যায়। এবং কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই বিকাশের মাধ্যমে খুব সহজে টাকা পাঠানো যায়। বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে টাকা প্রদানকারী ব্যক্তি নিজে তার ফোন থেকে টাকা পাঠাতে ও তার অ্যাকাউন্ট চেক করতে পারবেন।

বিকাশের মাধ্যমে টাকা বিদেশ থেকে আমাদের দেশে পাঠালে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই দেশে টাকা পৌঁছায়। বিদেশ থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে বাড়তি খরচের কোন প্রয়োজন হয় না।শুধুমাত্র যে ব্যক্তি ক্যাশ আউট করবে তাকে প্রতি এক হাজার টাকায় ১৪ টাকা পে করতে হবে। টাকা গ্রহণকারী নিজেই তার মোবাইল থেকে বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে টাকা যেকোনো সময় যে কোন জায়গা থেকে উত্তোলন করতে পারবেন।

অন্যান্য মাধ্যমে টাকা পাঠালে ২৪ ঘন্টা অনেক সময় থেকে এক সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। আর বিকাশে টাকা আসতে সময় লাগে মাত্র কয়েক সেকেন্ড। তাই বিদেশ থেকে আমাদের দেশের টাকা পাঠানোর দ্রুততম মাধ্যম হিসেবে বিকাশ কে প্রাধান্য দেওয়া হয়। আর বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর ফলে দেশের সরকারি খাতে রেমিটেন্স যোগ হয়। তাই যারা বিদেশ থেকে দ্রুত টাকা পাঠাতে চান তারা নিঃসন্দেহে বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে টাকা পাঠাতে পারেন।

২. ওয়াইজঃ বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুততম মাধ্যম গুলোর মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ওয়াইজ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে টাকা পাঠানোর জন্য খুবই দ্রুত কাজ করে এই প্রতিষ্ঠানটি। আমার দেশে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে বিকাশের পরপরই এই প্রতিষ্ঠানের অবস্থান। এই প্রতিষ্ঠানের বয়স খুব অল্প হলেও খুব দ্রুত এর গ্রাহক সংখ্যা অনেক বেশি বেড়ে গেছে। কারণ এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দ্রুত এবং নিরাপত্তার সহিত দেশে টাকা পাঠানো যায়।

মোবাইলের মাধ্যমে এই অ্যাপস টি ব্যবহার করা যায় এবং প্রবাসী ভাইয়েরা নিজেরাই এই অ্যাপস ব্যবহার করে টাকা দেশে পাঠাতে পারবেন। এর জন্য কোন প্রতিষ্ঠানের নিকট যাওয়ার প্রয়োজন হয় না।এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে টাকা পাঠালে খরচ খুবই কম হয় কারণ এই প্রতিষ্ঠান নামমাত্র সামান্য কিছু খরচ নিয়ে থাকে। বাঙ্গালী প্রবাসীদের জন্য তাই এই অ্যাপসটি খুবই জনপ্রিয়। তবে এই অ্যাপসটিতে জয়েন করার জন্য আপনাকে সঠিক তথ্য প্রদান করতে হবে।

৩. ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নঃ টাকা পাঠানোর বিভিন্ন মাধ্যম গুলোর মধ্যে এই মাধ্যমটি অনেক পুরাতন।দীর্ঘদিন থেকে এই প্রতিষ্ঠানটি টাকা আদান প্রদানের কাজ করে থাকে। তবে বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানটি একটি অ্যাপস তৈরি করেছে, যে এপস এর মাধ্যমে একজন প্রবাসী নিজেই টাকা তার পরিবারের একাউন্টে পাঠাতে পারবে। তাই বিদেশ থেকে দ্রুত টাকা পাঠানোর অন্যান্য মাধ্যমের মধ্যে এটি একটি মাধ্যম। বাঙালি প্রবাসীরা এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দ্রুত বিদেশ থেকে দেশে টাকা পাঠাতে পারবেন।

৪. এক্স ইঃ বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুততম মাধ্যমে গুলোর মধ্যে চার নম্বরে অবস্থান করছে এই প্রতিষ্ঠানটি। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আপনি খুবই সামান্য খরচে এবং অল্প সময়ের মধ্যে দেশের টাকা পাঠাতে পারবেন। যারা দেশে টাকা পাঠাতে চান কিন্তু চার্জ কম দিতে চান তাদের জন্য এই প্রতিষ্ঠানটি বেশ জনপ্রিয়। তাই যারা বাঙালি প্রবাসী আছেন তারা অল্প খরচে এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আপনার পরিবারের নিকট সহজে টাকা পাঠাতে পারবেন।

৫. ট্যাপ ট্যাপ সেন্ডঃ বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুততম মাধ্যমগুলোর মধ্যে পঞ্চম অবস্থানে আছে ট্যাপ ট্যাপ সেন্ড। এই অ্যাপস টি ব্যবহার করে খুব সহজে একজন টাকা প্রদানকারী ব্যক্তি তার পরিবারের নিকট টাকা পাঠাতে পারবেন। মোবাইল অ্যাপস থাকার কারণে কোনো রকম ঝামেলা নেই এবং অল্প খরচেই দেশে টাকা পাঠাতে পারবেন। এই এপস ব্যবহার করে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে কোন প্রকার ঝুঁকি থাকে না। অর্থাৎ আপনি অত্যন্ত নিরাপত্তা সহিত টাকা পাঠাতে পারবেন।

আপনি কত টাকা পাঠাতে চান তা অ্যাপসে উল্লেখ করে দিয়ে সেন্ড অপশনে ট্যাপ করলেই মুহূর্তের মধ্যে আপনার পরিবারের নিকট টাকা পৌঁছে যাবে। তবে এই অ্যাপসটিতে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য আপনাকে সঠিক তথ্য প্রদান করতে হবে। তাহলে আপনি অল্প খরচে নিরাপত্তার সহিত দেশে টাকা পাঠাতে পারবেন। এই অ্যাপস ব্যবহার করে টাকা পাঠানোর মাধ্যমে আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণ বোনাস পাবেন এই প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে।

৬. স্ক্রিলঃ বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুত মাধ্যমগুলোর মধ্যে ষষ্ঠ স্থান অবস্থান করছে স্ক্রিল। বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য অত্যন্ত নিরাপদ একটি মাধ্যম হচ্ছে স্ক্রিল। কারণ যেসব ভাই-বোনেরা ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করে থাকেন তাদের বেশিরভাগ টাকা প্রদান করা হয় পেপালের মাধ্যমে, যেহেতু আমাদের দেশে পেপাল নেই তাই এর বিকল্প হিসেবে স্ক্রিল খুবই উপযুক্ত একটি মাধ্যম। এই অ্যাপস টি ব্যবহার করে প্রবাসী ভাইয়েরাও খুব সহজে এবং দ্রুত দেশে টাকা পাঠাতে পারবেন।

৭. রেমিটলিঃ কম খরচে বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর জন্য অন্যতম একটি মাধ্যম হচ্ছে রেমিটলি। বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর জন্য দ্রুততম মাধ্যম গুলোর মধ্যে এদের অবস্থান সপ্তম। বাংলাদেশের অনেক ব্যাংক এখন এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে টাকা আদান-প্রদান করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন। কারণ এই মাধ্যমে খরচ যেমন কম তেমনি দ্রুত টাকা পাঠানো যায়। সম্পূর্ণ ফ্রিতে আপনি এই প্রতিষ্ঠানে আপনার যাবতীয় সকল তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।

৮. মানিগ্রামঃ বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর জন্য এটি পুরাতন একটি মাধ্যম। তবে দীর্ঘদিন থেকে এই প্রতিষ্ঠানটি অত্যন্ত বিশস্ততার সহিত কাজ করে আসছেন। এই মাধ্যমে টাকা পাঠানোর জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট কিছু কাগজপত্র নিয়ে ও আপনি যে পরিমাণ টাকা পাঠাবেন সেই টাকা নিয়ে এজেন্ট অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। এরপর ওনারা আপনার কাগজপত্র দেখে আপনার টাকা দেশের একাউন্টে সেন্ড করবেন। অর্থাৎ বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুততম মাধ্যম গুলোর মধ্যে এটির অবস্থান হচ্ছে অষ্টম।

৯. জুমঃ যেসব গ্রাহকের বিদেশ থেকে পেপালের মাধ্যমে টাকা নিতে হয় তাদের জন্য উত্তম একটি বিকল্প হতে পারে জুম। কারণ এই প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন থেকে অত্যন্ত সততার সহিত বিদেশ থেকে টাকা আদান-প্রদানের কাজ করে আসছেন। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে খুব দ্রুত বিদেশ থেকে দেশে টাকা আনা যায় এবং এখানে ঝামেলা খুবই কম। তাই বলা যায় বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুততম মাধ্যম গুলোর মধ্যে এটার অবস্থান হচ্ছে নবম।

১০. ওয়ার্ল্ড রেমিটঃ বিদেশ থেকে দেশে টাকা পাঠানোর জন্য দ্রুত এবং বিশ্বস্ত একটি মাধ্যম হচ্ছে ওয়ার্ল্ড রেমিট। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে খুবই অল্প খরচে এবং অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের দেশে টাকা পাঠানো যায়। এই প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এখানে টাকা পাঠালে কোনরকম ঝুঁকি থাকে না।তাই আমাদের দেশের প্রবাসী বাঙালিরা সহজেই এই মাধ্যমে টাকা দেশে পাঠাতে পারবেন। বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুততম মাধ্যম গুলোর মধ্যে এর অবস্থান হচ্ছে দশম।

টাকা পাঠানোর সবচেয়ে নিরাপদ উপায় কোনটি

আপনারা অনেকেই জানতে চান টাকা পাঠানোর সবচেয়ে নিরাপদ উপায় কোনটি। যেসব বাঙালি ভাইয়েরা প্রবাসে থাকেন তাদের জন্য এই বিষয়টি জানা খুবই জরুরী। কারন আপনার কষ্টে অর্জিত টাকা যেন নষ্ট না হয় এই জন্যই এই বিষয়টি জানা থাকা প্রয়োজন। টাকা পাঠানোর সবচেয়ে নিরাপদ উপায় হচ্ছে ব্যাংক। কারণ ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা প্রদান করলে সে টাকা কোনভাবেই নষ্ট হওয়ার সুযোগ থাকে না এবং আপনার পরিবার নিরাপদে টাকাটি পেয়ে থাকেন।

আপনি অন্যান্য মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারেন তবে সেটা কোনভাবে নিরাপদ নয়। বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর অনিরাপদ পদ্ধতি হচ্ছে হন্ডি। এই মাধ্যমে টাকা পাঠালে আপনি যেকোনো সময় যে কোন বিপদের সম্মুখীন হতে পারেন। এছাড়াও ব্যাংকে টাকা পাঠানোর মাধ্যমে আপনার পরিবার অতিরিক্ত ২.৫% রেমিটেন্স বোনাস পাবে। ব্যাংকে টাকা আসলে যেকোনো সময় যে কোন জায়গা থেকে টাকা উত্তোলন করা যায় নিরাপদে। তাই এক্ষেত্রে বলা যায় টাকা পাঠানোর সবচেয়ে নিরাপদ উপায় হল ব্যাংক।

বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম

আমাদের দেশের অনেক মানুষ শ্রমিক হিসেবে এবং বিভিন্ন কাজে বিদেশে অবস্থান করে থাকেন। তারা প্রতি মাসে তাদের পরিবারের জন্য দেশে টাকা পাঠিয়ে থাকেন। অনেক প্রবাসী বাঙালি হুন্ডির মাধ্যমে আমাদের দেশের টাকা পাঠান। যা কোনভাবেই নিরাপদ নয়। তাই অনেক ভাই বিদেশ থেকে ব্যাংকের টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে যাবতীয় সকল সঠিক তথ্য।

বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম সমুহঃ
  • বাংলাদেশের যে ব্যাংকে টাকা পাঠাতে চান, সেই ব্যাংকের মানি এক্সচেঞ্জ হাউজ আপনি যে দেশে অবস্থান করছেন সে দেশের কোথায় আছে তা খুঁজে নিতে হবে।
  • এরপর উক্ত মানি এক্সচেঞ্জ হাউসজে গিয়ে একটি কেওয়াইসি ফরম পূরণ করতে হবে।
  • উক্ত ফর্মটিতে আপনার ব্যক্তিগত সকল তথ্য প্রদান করতে হবে।
  • এরপর আপনি বাংলাদেশের কোন ব্যাংকে টাকা পাঠাতে চান সেই ব্যাংকের যাবতীয় সকল তথ্য ওখানে প্রদান করতে হবে, অর্থাৎ ব্যাংকের নাম, ব্রাঞ্চ এর নাম, অ্যাকাউন্ট নাম্বার, অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের নাম ইত্যাদি।
  • তবে এই ফর্মে অবশ্যই আপনার পাসপোর্ট নাম্বার প্রদান করতে হবে।
  • আপনি কত টাকা পাঠাবেন তা এই ফর্মে উল্লেখ করতে হবে।
  • এরপর এই ফর্ম ও টাকা সহ নির্দিষ্ট এক্সচেঞ্জ হাউজে জমা দিতে হবে।
  • জমা দেওয়ার পর আপনার কাগজপত্র সবকিছু তারা ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে সব ঠিকঠাক থাকলে ওই দিনই আপনার টাকা তারা দেশে পাঠিয়ে দেবে।
  • আপনার পরিবার এই টাকাটি সেদিন অথবা তার পরের দিন উত্তোলন করতে পারবেন।

বিদেশ থেকে বাংলাদেশে টাকা আসতে কত দিন সময় লাগে

বিদেশ থেকে বাংলাদেশে টাকা আসতে কত দিন সময় লাগে

বিদেশ থেকে বাংলাদেশে টাকা আসতে কত দিন সময় লাগে এই বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনি কোন মাধ্যমে টাকা পাঠাচ্ছেন। যেমন আপনি যদি বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে থাকেন তাহলে সেই টাকা মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে দেশে এসে পৌঁছাবে। আবার যদি কোন মানি এক্সচেঞ্জ হাউজের মাধ্যমে টাকা প্রদান করে থাকেন তাহলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে দেশের একাউন্টে এসে পৌঁছাবে। অর্থাৎ আপনার পরিবার এক থেকে দুইদিন পরে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।

আবার যদি আপনি হুন্ডির মাধ্যমে টাকা প্রদান করে থাকেন তাহলে সে টাকা সর্বোচ্চ একদিনের মধ্যে আপনার পরিবারের নিকট পৌঁছে যাবে।তবে এটি একটি অবৈধ পদ্ধতি। এখানে বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি রয়ে যায়। বিদেশ থেকে টাকা প্রদানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে নিরাপদ মাধ্যম হচ্ছে ব্যাংক। তবে বর্তমানে বিকাশ এই দিক দিয়ে খুবই এগিয়ে আছেন। অর্থাৎ আপনি যে মাধ্যমে টাকা পাঠান না কেন সেই টাকা সর্বোচ্চ এক থেকে দুই দিনের মধ্যে আপনার পরিবার নিকট পৌঁছে যাবে।

বিদেশ থেকে দেশে সর্বোচ্চ কত টাকা পাঠানো যায়

আপনারা অনেকেই জানতে চান বিদেশ থেকে দেশে সর্বোচ্চ কত টাকা পাঠানো যায়। এখানে দুইটা বিষয় কাজ করে একটি হচ্ছে আপনি যদি বিকাশ বা এই জাতীয় কোন অ্যাপস এর মাধ্যমে যদি টাকা পাঠিয়ে থাকেন। তাহলে আপনার সর্বোচ্চ ২,৫০,০০ টাকা পর্যন্ত পাঠাতে পারবেন।একদিনে আপনি এর চেয়ে বেশি টাকা পাঠাতে পারবেন না। অর্থাৎ বিকাশ জাতীয় অ্যাপসের লিমিট হচ্ছে এই পর্যন্ত।

আপনি যদি ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে দেশে টাকা আনতে চান সে ক্ষেত্রে কোন লিমিট নেই। অর্থাৎ আপনি ব্যাংকের মাধ্যমে যত খুশি তত টাকা নিয়ে আসতে পারবেন। তবে প্রবাসী ভাইয়েরা বিদেশ থেকে দেশে একদিনের সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ লক্ষ পর্যন্ত টাকা পাঠাতে পারবেন। যদিও প্রবাসী ভাইয়েরা এত টাকা পাঠাতে পারেন না। তবে যদি আপনি অনেক বেশি টাকা প্রদান করে থাকেন সেক্ষেত্রে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নিকট থেকে লিমিট সম্পর্কিত তথ্য জেনে নিবেন।

বৈধভাবে বিদেশ থেকে দেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম

প্রতিবছর আমাদের দেশ থেকে শ্রমিক হিসেবে বিশ্বের এ ১৬০টি দেশে মানুষ যাতায়াত করছে। তারা প্রতিনিয়ত তাদের পরিবারের জন্য টাকা পাঠাচ্ছেন। কিন্তু অনেকেই জানেন না বিদেশ থেকে দেশে টাকা পাঠানোর জন্য বৈধ মাধ্যম কোনটি এবং অবৈধ মাধ্যম কোনটি। বিদেশ থেকে দেশের টাকা পাঠানোর সবচেয়ে বৈধ ও উত্তম উপায় হচ্ছে ব্যাংকের মাধ্যমে। কারণ ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠালে আপনার টাকাটি যেমন নিরাপদে আপনার পরিবারের নিকট পৌঁছে যায়।

তেমনি দেশের রেমিটেন্স এর অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হয়ে যায়। আর এজন্যই আমাদের দেশের প্রবাসী শ্রমিকদের রেমিটেন্স যোদ্ধা বলা হয়। তবে অনেকেই হুন্ডির মাধ্যমে আমাদের দেশের টাকা পাঠিয়ে থাকেন। এটি একদিকে যেমন আপনার জন্য অনেক অনিরাপদ তেমনি দেশের জন্য কল্যাণকর নয়।তাই এক কথায় বলা যায় বৈধভাবে বিদেশ থেকে দেশে টাকা পাঠানোর সবচেয়ে নিরাপদ মাধ্যম হচ্ছে ব্যাংক।
বৈধভাবে বিদেশ থেকে দেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম

বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর সীমাবদ্ধতা আছে কি

বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর সীমাবদ্ধতা আছে কি এই বিষয়ে আপনারা অনেকেই জানতে চান। বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর জন্য সীমাবদ্ধতা অবশ্যই আছে। কারণ আপনি ইচ্ছে করলেই বিদেশ থেকে টাকা পাঠাতে পারবেন না। টাকা পাঠানোর জন্য আপনাকে প্রথমে প্রমাণ দিতে হবে যে আপনি ওই দেশে কোন পেশার সাথে জড়িত আছেন। অথবা আপনি যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন সেই প্রতিষ্ঠানে নির্দিষ্ট কাগজপত্র।

আবার আপনি ইচ্ছে করলেই অনেক বেশি টাকা পাঠাতে পারবেন না। কারণ আপনি টাকা পাঠানোর সময় আপনাকে আপনার আয়ের উৎস সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদান করতে হবে। আপনি যদি বিকাশের মাধ্যমে টাকা প্রদান করে থাকেন তাহলে দিনে সর্বোচ্চ দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা পাঠাতে পারবেন।আবার যদি ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠান তাহলে সে ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোন লিমিট থাকে না। তাই এক কথায় বলা যায় বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর জন্য সীমাবদ্ধতা অবস্থায় আছে।

বিদেশ যাওয়ার সময় কত টাকা নেওয়া যায়

প্রতিবছর আমাদের দেশ থেকে অনেক মানুষ বিদেশে বিভিন্ন কারণে যেয়ে থাকেন। ব্যবসা, চিকিৎসা ও ভ্রমণের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ থেকে অনেক মানুষ চায়। আপনি যে উদ্দেশ্যে যান না কেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১২০০০ ডলার সঙ্গে নিতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে জেনে রাখা ভালো একজন ব্যক্তি ১২০০০ ডলার ক্যাশ সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবেন না।অর্থাৎ পাঁচ হাজার ডলার ক্যাশ নিতে পারবে।

বাকি সাত হাজার ডলার ব্যাংক একাউন্ট অথবা ইন্টারন্যাশনাল কার্ডে নিয়ে যেতে হবে। এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী একজন ব্যক্তি এক বছরের সর্বোচ্চ ১২০০০ ডলার পর্যন্ত বিদেশে গিয়ে খরচ করতে পারবেন। সেটা আপনি একবার অথবা একাধিক খরচ করতে পারেন, তবে এর উপর আপনি খরচ করতে পারবেন না। চিকিৎসা সহ যদি অন্যান্য কাজে আরও বেশি টাকা খরচ করতে হয় তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমতি নিতে হবে।

বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুততম মাধ্যমে কোনটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর

বিদেশ থেকে বিকাশে কত টাকা পাঠানো যায়?
বিদেশ থেকে বিকাশে একদিনে সর্বোচ্চ ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত পাঠানো যায়। এর বেশি টাকা বিকাশে কোনভাবেই পাঠানো সম্ভব নয়। যদিও প্রবাসী ভাইয়েরা এর চেয়ে খুব বেশি টাকা পাঠান না।
তাই একদিনে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পাঠানোর জন্য বিকাশই সবচেয়ে নিরাপদ একটি মাধ্যম হতে পারে।

ছেলেকে বিদেশে কত টাকা পাঠানো যায়?
আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী একজন ব্যক্তি আমাদের দেশ থেকে বিদেশে এক বছরে সর্বোচ্চ ২ লক্ষ ৫০ হাজার ডলার পাঠাতে পারবেন। এটা হতে পারে একবারে অথবা একাধিকবার। আপনি যতবার সেন্ড করেন না কেন এই সীমা আপনি কখনোই অতিক্রম করতে পারবেন না। তাই যারা আমাদের দেশ থেকে বিদেশে টাকা পাঠাতে চান তাদের জন্য এই বিষয়টি জানা খুবই জরুরী। এ বিষয়ে আরো তথ্য জানতে আমাদের সঙ্গে থাকুন।

বিদেশ থেকে টাকা আনার ক্ষেত্রে কোন ব্যাংক ভালো? 
আপনারা অনেকেই এই বিষয়ে প্রশ্ন করে থাকেন যে বিদেশ থেকে টাকা আনার ক্ষেত্রে কোন ব্যাংক ভালো। আমাদের দেশে অনেক ব্যাংক থাকলেও কয়েকটি ব্যাংক বিদেশ থেকে টাকা আনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো সার্ভিস দিয়ে থাকে। এর মধ্যে এক নম্বর অবস্থানে আছে ইসলামী ব্যাংক। কারণ এই ব্যাংকের মাধ্যমে আপনি অতি দ্রুত এবং নিরাপত্তার সহিত টাকা উত্তোলন করতে পারবেন এবং এই প্রতিষ্ঠানের লোকজনের আচরণ খুবই ভালো।

বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর সবচেয়ে নিরাপদ উপায় কোনটি?
বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর জন্য সবচেয়ে নিরাপদ উপায় হচ্ছে ব্যাংক। আপনি ব্যাংক ছাড়াও অন্যান্য অনেক মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারবেন কিন্তু সেগুলো মোটেও নিরাপদ নয়। কারণ ব্যাংক থেকে টাকা মার যাওয়ার কোন সুযোগ থাকে না। তাই বিদেশ থেকে টাকা পাঠাতে হলে অবশ্যই ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠাবেন। তাছাড়াও ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর আরেকটি সুবিধা হচ্ছে রেমিটেন্স বোনাস পাওয়া যায়। যেটা আপনি অন্যান্য মাধ্যমে পাবেন না।

বিকাশ থেকে ভারত থেকে বাংলাদেশের টাকা পাঠানোর উপায়?
ভারত থেকে আমাদের বাংলাদেশ বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর জন্য সরাসরি কোন মাধ্যম নেই।অর্থাৎ ভারত থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে হলে নির্দিষ্ট একটি ব্যাংকের সহযোগিতা নিতে হবে।বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে টাকা পাঠানোর জন্য যেমন শুধুমাত্র বিকাশ অ্যাপ থাকলেই হবে কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে সেটা হবে না। তাই যদি আপনি ভারত থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে চান তাহলে আপনার নিকটস্থ ব্যাংকের সহযোগিতা নিতে হবে।

শেষ কথাঃ বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুততম মাধ্যম কোনটি ও কি কি

তাহলে উপরের আলোচনা থেকে আপনারা জানতে পারলেন বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুততম মাধ্যম কোনটি। নিশ্চয়ই এই বিষয়গুলি আপনি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুততম মাধ্যম গুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো যে মাধ্যম সেটি হচ্ছে বিকাশ। কারণ বিকাশের মাধ্যমে বিদেশ থেকে দেশে টাকা আসতে সময় লাগে মাত্র কয়েক সেকেন্ড। আর অন্যান্য মাধ্যমে টাকা আসতে সময় লাগে প্রায় ২৪ ঘন্টা।

এছাড়াও আরো অন্যান্য উপায়ে টাকা পাঠানো যায় যেমন, ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, জুম, এক্সই, পেপাল, ওয়াইজ, ওয়াল্ড রেমিট এরকম বিভিন্ন মাধ্যমে আপনি টাকা পাঠাতে পারবেন এবং এই মাধ্যম গুলি খুবই দ্রুত কাজ করে থাকে। তবে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে টাকা পাঠালে খরচ যেমন কম তেমন আপনার টাকা সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকবে। অন্যান্য মাধ্যমে টাকা পাঠালে সে টাকাটি নিরাপদ থাকে না।এছাড়াও এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে টাকা পাঠালে অতিরিক্ত বোনাস পাওয়া যায়।

তাই লেখক হিসেবে আমার পরামর্শ হচ্ছে যদি আপনি দ্রুত বিদেশ থেকে দেশে টাকা পাঠাতে চান তাহলে বিকাশের মাধ্যমে আপনি পাঠাতে পারেন। যদিও বিকাশের ক্ষেত্রে খরচ একটু বেশি কিন্তু দ্রুত আপনি টাকা পাঠাতে পারবেন। আর যদি মনে করেন একটু কম খরচে পাঠাবেন তাহলে উপরে উল্লেখিত মাধ্যমগুলো দিয়ে পাঠাতে পারবেন। সব সময় গুরুত্বপূর্ণ ও সঠিক তথ্য জানার জন্য আমাদের এই ওয়েবসাইটের সঙ্গেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এট্রাকশন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url