আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধির উপায় - আউশ ধানের হাইব্রিড জাতসমূহ
সম্মানিত পাঠক আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনারা জানতে পারবেন আউশ ধানের ফলন
বৃদ্ধির উপায় ও আউশ ধানের হাইব্রিড জাত সমূহ সম্পর্কে। এই
সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানার জন্য এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা আরো জানতে পারবেন আউশ ধানের হাইব্রিড
জাতসমূহ ও কি স্প্রে করলে আউশ ধানের ফলন বেশি হয়, এই সকল বিষয়ে
বিস্তারিত জানতে আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধির উপায় - আউশ ধানের হাইব্রিড জাতসমূহ
- আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধির উপায়
- আউশ ধানের হাইব্রিড জাতসমূহ
- কি স্প্রে করলে আউশ ধানের ফলন বেশি হয়
- আউশ ধান চাষের সময় কাল
- আউশ ধানের বীজতলা তৈরির নিয়ম
- বোনা আউশ ধানের জাত কোনটি
- আউশ ধান কখন হয়
- আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
-
শেষ কথাঃ কিভাবে আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধি করা যায়
আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধির উপায়
আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানতে চান, চলুন এই
বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। ধান আমাদের দেশের প্রধান প্রধান
ফসল। আমাদের দেশের আনাচে কানাচে সব জেলাতেই ধান চাষ হয়। তবে
আমন এবং বোরোর তুলনায় আউশ ধান পরিমানে কম চাষ হয়। আউশ ধান পরিমানে কম
চাষ হলেও আমরা সবাই চাই এই ধানের সর্বোচ্চ ফলন পাওয়ার জন্য।
আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধির জন্য আপনাকে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে
তা হল ধানের বীজ, এরপর আরো যে বিষয়গুলো আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে তা হল সময় মত
রোগ ও পোকা দমন, সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ। এছাড়াও আরো কিছু বিষয় আছে
যেগুলো ভালোভাবে লক্ষ্য রাখলে আউশ ধানের ফলন বেশি হয়। চলুন তাহলে
জেনে নেওয়া যাক আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধির জন্য কি কি কাজ করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ
সরকারিভাবে কোন কোন দেশে যাওয়া যায়
আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধির উপায় সমুহঃ
জাত নির্বাচনঃ ভালো জাতে ভালো ফলন এই কথাটি আপনারা অনেকেই
জানেন। কারণ জাত যদি ভালো না হয় আপনি যতই যত্ন করেন না কেন কোন কাজ হবে না।
তাই আপনাকে মনে রাখতে হবে আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধির জন্য প্রথমে আপনাকে
অবশ্যই ভালো জাত নির্বাচন করতে হবে। আউশ ধানের ভাল জাতের মধ্যে
উল্লেখযোগ্য হলো-বি আর ২১, বি আর ২৬, বি আর ২৭, বি আর ৪৮, বি আর ৫৫,
ব্রিধান ৯৮, ব্রি ধান ১০৬, ব্রিধান ৮২, ব্রিধান ৮৩ ইত্যাদি।
সুষম সার প্রয়োগঃ আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধির জন্য সময়মতো এবং
সঠিক পরিমাণে সুষম সার প্রয়োগ করতে হবে। যেমন চাষের শুরুতে টিএসপি, এমওপি,
জিপসাম, জিংক, বোরন, ম্যাগনেসিয়াম নির্দিষ্ট মাত্রা প্রয়োগ করতে
হবে। এরপর ধানের বর্ধনশীল অবস্থায় একবার এবং থোর অবস্থায়
আরেকবার সুষম মাত্রায় সুষম সার প্রয়োগ করতে হবে। তাহলে আউশ ধানের ফলন
বেশি হবে।
আগাছা দমনঃ আউশ ধানের জমিতে বিভিন্ন ধরনের আগাছা হয়। যেমন শ্যামা,
চেচরা, দূর্বা, পানি লং, পানি কচু, ঝিলমরিচ এরকম বিভিন্ন ধরনের আগাছা হয়ে
থাকে। এসব আগাছা মাটিতে প্রয়োগকৃত সারের বেশিরভাগ খেয়ে ফেলে। যার
ফলে আমরা ফলন বৃদ্ধির জন্য যে সার ব্যবহার করে থাকি তা খুব বেশি কাজে আসে
না। তাই আউশ ধরনের ফলন বৃদ্ধির জন্য সময় মত সমস্ত আগাছা দমন করতে হবে।
পানি সেচ ব্যবস্থাপনাঃ আউশ ধানসহ যেকোনো ধানের জন্য পানি একটি
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ ধানের ভাল ফলন পেতে হলে ধানের জমিতে পানি
ব্যবস্থাপনা ভালো রাখতে হবে। অর্থাৎ আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধির জন্য আপনাকে
জমিতে চারার রোপন থেকে শুরু করে ধান পাকার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আউশ
ধানের জমিতে এক থেকে দুই ইঞ্চি পানি রাখতে হবে। এভাবে পানি ব্যবস্থাপনা ঠিক
রাখলে আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধি পাবে।
রোগ ও পোকা দমনঃ আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধির জন্য রোগ ও পোকা দমন একটি
গুরুত্বপূর্ণ কাজ।কারণ আউশ ধানে বেশ কিছু রোগ যেমন-খোল পোড়া,খোল পচা,
লক্ষির গু, ব্লাস্ট, বিএলবি এরকম বেশ কিছু রোগ হয়ে থাকে। এছাড়াও আউশ
ধানে বেশ কিছু পোকা আক্রমণ হয় যেমন-মাজরা পোকা, গান্ধী পোকা, কারেন্ট পোকা, পাতা
মোড়ানো পোকা, গল মাছি ইত্যাদি। এসব রোগ ও পোকার আক্রমণের কারনে আউশ
ধানের ফলন কমে যায়।
তাই আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধির জন্য অবশ্যই সময় মত এসব রোগ ও পোকা দমন করতে
হবে। কারণ এসব রোগ ও পোকা ধান গাছকে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকে। যদি
ধান গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে ওই ধান গাছ থেকে ভালো ফলন পাওয়া যায়
না। এজন্য রোগ ও পোকা দমন করতে পারলে ধান গাছ থেকে ভালো ফলন পাওয়া যায়।
তাই আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধির জন্য অবশ্যই রোগ ও পোকা সময় মতো দমন করতে হবে।
অধিক কুশি বৃদ্ধির ব্যবস্থা করাঃ ধানের যত বেশি কুশি হবে তত
বেশি শিষ হবে। আর শিষের সংখ্যা যত বেশি হবে ধানের ফলন তত বেশি হবে। তাই
আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধির জন্য অধিক কুশি আনার ব্যবস্থা করতে হবে। ধান
গাছে অধিক কুশি পাওয়ার জন্য ধান গাছের বয়স ১৫ থেকে ২০ দিন হলে ওই সময় ধান গাছে
৩৩ শতকের বিঘায় এক কেজি হাড়ে আশি পার্সেন্ট সালফার সার ব্যবহার করতে হবে। তাহলে
কুশির সংখ্যা বেশি হবে এবং ফলন বেশি হবে।
আউশ ধানের হাইব্রিড জাতসমূহ
আমাদের দেশ একটি জনবহুল দেশ। প্রতিবছর এদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু
দিন দিন আবাদি জমি পরিমান কমে যাচ্ছে। যার কারণে এখন আমাদের অল্প জমিতে বেশি
উৎপাদন করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। আর অল্প জমিতে বেশি ফলন পেতে হলে অবশ্যই
হাইব্রিড জাতের ধান চাষ করতে হবে। আমাদের দেশে আউশ ধানের বেশ কয়েকটি
হাইব্রিড ধানের জাত পাওয়া যায়। চলুন তাহলে এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে
নেওয়া যাক।
আরো পড়ুনঃ
মোবাইলে বিরক্তিকর এড বন্ধ করার উপায়
আউশ ধানের হাইব্রিড জাতসমূহঃ
- ব্রি ধান ৮২
- ব্রি ধান ৮৩
- ব্রি ধান ৮৫
- ব্রি হাইব্রিড ৭
- ব্রি ধান ৯৮
- ব্রি ধান ৬৫
- ব্রি ধান ১০৬
- বি আর ২১
- বি আর ২৬
- বি আর ২৭
- বি আর ৪৮
- বি আর ৫৫
- ব্রি ধান ২৮
- পরাঙ্গী
- কালা মানিক
- সূর্যমুখী
- ষাইটটা
- মাটিচাক
- পঙ্খিরাজ
- লক্ষ্মী লতা
- নরই
- বটেশ্বর
- কটকি
কি স্প্রে করলে আউশ ধানের ফলন বেশি হয়
আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধির জন্য স্বাভাবিক যে কার্যক্রম যেমন জাত নির্বাচন, জমি
নির্বাচন, সার প্রয়োগ, সময় মত সেচ প্রয়োগ, সময় মতো রোগ ও পোকা
দমন এগুলো তো আপনাকে করতেই হবে। কারণ এই কাজগুলো ব্যতীত আপনার
কোনোভাবেই আউশ ধানের ফলন বেশি পাওয়া সম্ভব নয়। এর পাশাপাশি এক ধরনের
স্প্রে আছে যেটি শেষ পর্যায়ে করার মাধ্যমে আপনার ফলন বেশি হতে পারে। চলুন তাহলে
এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ
চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার
ধানের যখন শীষ পাঁচ থেকে দশ পার্সেন্ট বের হবে ঠিক সেই সময় একটি ভালো মানের
ছত্রাকনাশক ও একটি ভালো মানের কীটনাশক এর সাথে অ্যামাইনো এসিড জাতীয় পণ্য
বা জিব্রালিক এসিড জাতীয় পণ্য আলাদাভাবে স্প্রে করা যায় তাহলে ধানের
পরাগায়ণ ভালো হয়, শিষ গুলো একসঙ্গে বের হয়, এবং ধানগুলো একসঙ্গে পেকে
যায়। যার ফলে আউশ ধানের ফলন বেশি হয়। অর্থাৎ এই সময়ে এই স্প্রে করার
মাধ্যমে আউশ ধানের ফলন নিশ্চিত ভাবে বৃদ্ধি পায়।
আউশ ধান চাষের সময় কাল
আউশ ধান চাষের সময় কাল সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানতে চান। আউশ ধান মূলত
বৃষ্টি নির্ভর একটি ধান। অর্থাৎ মে মাসের মাঝামাঝি থেকে জুন মাসের মাঝামাঝি
পর্যন্ত বৃষ্টির ওপর নির্ভর করে এই জাতের ধান চাষ করা হয়। এই সময় যদি
বৃষ্টি ভালো হয় তাহলে আউশ ধানের ফলন ভালো হয়। যদিও বর্তমানে আমাদের দেশে
সেচ ব্যবস্থা ভালো হওয়ার কারণে বৃষ্টি কম হলেও এই ধানের ফলন বেশি পাওয়া
যায়।
বাংলাই বলতে গেলে চৈত্র বৈশাখ মাসে চাষ করে আষাঢ় শ্রাবণ মাসে এই ধান কাটতে
হয়। যদিও এই সময় আমাদের দেশের বিভিন্ন জায়গায় কোন চাষ হয় না। তবে
দক্ষিণবঙ্গের কিছু কিছু এলাকায় এই সময়ে আউশ ধান চাষ হয়ে থাকে। প্রথম দিকে
আউশ ধানের ফলন অনেক কম হলেও বর্তমানে ৩৩ শতকের বিঘায় ২২ থেকে ৩০ মন পর্যন্ত ফলন
পাওয়া যাচ্ছে।
আউশ ধানের বীজতলা তৈরির নিয়ম
আমাদের দেশের সকল কৃষক ভাইদের আউশ ধানের বীজতলা তৈরির নিয়ম সম্পর্কে সঠিক
ধারণা থাকা দরকার। যেনতেন ভাবে বীজতলা তৈরি করার ফলে একদিকে যেমন চারা
ভালো হয় না, অন্যদিকে ওই চারা রোপনের পর ভালো ফল পাওয়া যায় না। তাই বীজতলা
সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা দরকার। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক আউশ ধানের আদর্শ
বীজতলা তৈরির জন্য যে বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখতে হবে।
আউশ ধানের বীজতলা তৈরির নিয়মঃ
- আউশ ধানের বীজতলা তৈরির জন্য চারিদিকে খোলা, সব সময় রোদ পড়ে, আলো বাতাস চলাচল করে এমন জমি নির্বাচন করতে হবে, কারণ ছায়াযুক্ত স্থানে বীজতলা তৈরি করলে, চারাগুলো দুর্বল ও লিকলিকে হয়ে যায়।
- ভালোভাবে চাষ ও মই দিয়ে বীজতলা তৈরি করে নিতে হবে, এবং পর্যাপ্ত পানি দিয়ে থকথকে অবস্থা তৈরি করে নিতে হবে, এরপর ১ থেকে দেড় মিটার আকৃতির বেড তৈরি করতে হবে।
- প্রতি দুই বেডের মাঝখানে অন্ততপক্ষে ৩০ সেন্টিমিটার একটি নালা রাখতে হবে যেন অতিরিক্ত পানি বের করে দেওয়া যায় এবং ওই নালার মাধ্যমে শেষ দেওয়া যায়।
- প্রতিটা বেড এর উপরের অংশ একদম সমান করে নিতে হবে, যেন কোথাও উঁচু না হয়, উঁচু হওয়ার কারণে কোথাও পানি জমবে আবার কোথাও পানি হবে না, এতে করে চারার সমস্যা হতে পারে।
- প্রতি এক শতক বীজ তলায় এক থেকে দুই কেজি ধানের বীজ বপন করতে হবে, তাহলে প্রতিটি চারা সুস্থ সবল এবং সতেজ হবে, এর চেয়ে বেশি বীজ বপন করলে চারাগুলো দুর্বল ও লিকলিকে হয়ে যেতে পারে।
- বীজতলা থেকে চারা তোলার পূর্বে বীজতলায় হালকা করে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করে নিতে হবে, এতে করে চারা বীজ তলা থেকে মূল জমিতে রোপন করার পর্যন্ত যে ধকল যাবে সেটা কিছুটা রিকভারি হবে।
বোনা আউশ ধানের জাত কোনটি
দীর্ঘ কাল থেকে আমাদের দেশে আউশ ধানের চাষ হয়ে আসছে। তবে সেটা বোনা আউশ। অর্থাৎ আজ থেকে অনেক বছর আগে আউশ মৌসুমে মূল জমিতে ধানের বীজ ছিটিয়ে বীজ বপন করা হতো। এতে করে করে ফলন খুব বেশি হতো না, কিন্তু ওই সময় এটি ছিল একমাত্র আউশ ধান চাষের উপায়। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে আউশ ধানের চাষ হয় তবে সেটা বাণিজ্যিকভাবে। অর্থাৎ বর্তমান সময়ে প্রতি বিঘায় ২২ থেকে ৩০ মন পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়।
যেখানে আগে ফলন পাওয়া যেত সর্বোচ্চ ৬ থেকে ৭ মন। তবে আমাদের দেশে এখনো বোনা
আউশ চাষ হয়ে থাকে। অর্থাৎ সেই প্রচলন এখনো কিছুটা আছে। এখন বিষয় হলো
বোনা আউসের ক্ষেত্রে কোন কোন জাতের ধান চাষ করা যায়। অর্থাৎ বোনা আউজ ধানের
জাত কোনটি। বর্তমান সময়ে যে জাতটি বোনা আউশ চাষ করা যায় তা হল-ব্রিধান
৪৩। বাংলাদেশ ধান গবেষণা এই জাতটি বোন আউশ এর জন্য উদ্ভাবন করেছেন।
আউশ ধান আমাদের দেশে সাধারণত মে থেকে জুন মাসের মধ্যে রোপন করা হয়। যদিও এটি সম্পূর্ণ বৃষ্টির উপর নির্ভরশীল। যদি এই মৌসুমে ভালো বৃষ্টি হয় তাহলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দেশে এই সময় বৃষ্টিপাত খুবই কম হচ্ছে। তাই এর বিকল্প হিসেবে কৃত্রিমভাবে পানি সেচ ব্যবস্থা করার মাধ্যমে চাষ করে ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে। অর্থাৎ মে থেকে জুন মাসে অথবা চৈত্র মাসের মাঝামাঝি থেকে জৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত আউশ ধান রোপন করা যায়।
ধান লাগানোর কত দিন পর সার দিতে হয়?
ইউরিয়া সার তিন কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হয়। অর্থাৎ যেসব ধানের বয়স অল্প দিন সেসব ধানের ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৫ দিন বয়সে প্রথমবার, ৩০ থেকে ৩৫ দিন বয়সে দ্বিতীয়বার এবং ৫৫ থেকে ৬০ দিন বয়সে তৃতীয়বার ইউরিয়া সার ব্যবহার করতে হয়। অন্যান্য সার যেমন-জিংক, বোরন, জিপসাম, ম্যাগনেসিয়াম, সালফার এই সারগুলো চাষ করার সময় ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও টিএসপি ও এমওপি চাষ করার সময় অর্ধেক এবং পরবর্তী ২০ থেকে ৩০ দিন বয়সে দ্বিতীয়বার প্রয়োগ করতে হবে।
ধান চাষের সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি কোনটি?
ধান চাষের সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো সাড়ি করে ধান লাগানো। কারণ সারি করে ধান রোপন করলে বিভিন্নভাবে উপকৃত হওয়া যায় যেমন-সার প্রয়োগ ও সেচ প্রদানের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়, জমি নিরানী দেওয়ার ক্ষেত্রে ও আলো বাতাস প্রবেশের ক্ষেত্রে লাইন করে রোপন করা ধানের জমিতে বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়। এছাড়া লাইন করে ধান রোপণ করলে উক্ত ধানে আলো বাতাস ভালোভাবে প্রবেশ করে, যার কারণে রোগ ও পোকা আক্রমণ খুবই কম হয়।
ধান চাষের জন্য উপযোগী মাটি কোনটি?
ধান চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী মাটি হচ্ছে পলি দোআশ। যদিও আমাদের দেশে এখন প্রায় সব ধরনের মাটিতেই ধান চাষ হচ্ছে। কিন্তু পলি দোআশ ধানের ফলন সবচেয়ে ভালো হয়। অর্থাৎ এই ধরনের মাটিতে অল্প পরিচর্যা করেও বেশি ফলন পাওয়া যায়। তাই যদি আপনি ভালো ফল পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে পলি দোআশ মাটিতে ধান চাষ করতে হবে।
বাংলাদেশের প্রধান ধান চাষের মৌসুম কোনটি?
বাংলাদেশের প্রধান ধান চাষের মৌসুম হচ্ছে আমন মৌসুম। কারণ এই মৌসুমে ধান চাষ করতে কৃষকের খরচ কম হয়। তাই অন্যান্য মৌসুমে অন্যান্য ফসল চাষ করলেও আমন মৌসুমে আমাদের দেশের সর্বোচ্চ পরিমাণে ধানের চাষ হয়ে থাকে। অর্থাৎ এই সময় আমাদের দেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়।যার কারণে জমিতে সেচ দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। আর আপনার নিশ্চয়ই জানেন ধানের জমিতে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। এই কারণে আমাদের দেশে আমন মৌসুমের সবচেয়ে বেশি ধান চাষ হয়ে থাকে।
আউশ ধান কখন হয়
আউশ ধান কখন হয় আপনারা অনেকেই এই বিষয়ে জানতে চান। আজ থেকে অনেক
বছর আগে আমাদের দেশে ব্যাপকভাবে আউশ ধানের চাষ হতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে
আধুনিক কৃষি আসার কারণে আমরা বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করে যাচ্ছি। যার ফলে
আউশ ধানের চাষ খুবই কম হচ্ছে।শুধুমাত্র আমাদের দেশের দক্ষিণবঙ্গে কৃষকেরা এই
জিনিসটি এখনো ধরে রেখেছেন।
ওই সব অঞ্চলে এখনো ব্যাপকভাবে আউশ ধানের চাষ হয়। আর হবেই বা না কেন, কারণ
এই সময় সারাদেশের বিভিন্ন জায়গায় চাষকৃত জমি পড়ে থাকে, কিন্তু দক্ষিণবঙ্গের
কৃষক জমি ফেলে না রেখে তারা মে থেকে জুন মাসের মধ্যে অর্থাৎ চৈত্র
থেকে বৈশাখ জৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত জমিতে আউশ ধান চাষ করে থাকেন। এবং
প্রতি বিঘায় প্রায় ২২ থেকে ৩০ মন পর্যন্ত ফলন পেয়ে থাকেন।
আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
আউশ ধান কখন রোপন করা হয় কোন মাসে?আউশ ধান আমাদের দেশে সাধারণত মে থেকে জুন মাসের মধ্যে রোপন করা হয়। যদিও এটি সম্পূর্ণ বৃষ্টির উপর নির্ভরশীল। যদি এই মৌসুমে ভালো বৃষ্টি হয় তাহলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দেশে এই সময় বৃষ্টিপাত খুবই কম হচ্ছে। তাই এর বিকল্প হিসেবে কৃত্রিমভাবে পানি সেচ ব্যবস্থা করার মাধ্যমে চাষ করে ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে। অর্থাৎ মে থেকে জুন মাসে অথবা চৈত্র মাসের মাঝামাঝি থেকে জৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত আউশ ধান রোপন করা যায়।
ধান লাগানোর কত দিন পর সার দিতে হয়?
ইউরিয়া সার তিন কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হয়। অর্থাৎ যেসব ধানের বয়স অল্প দিন সেসব ধানের ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৫ দিন বয়সে প্রথমবার, ৩০ থেকে ৩৫ দিন বয়সে দ্বিতীয়বার এবং ৫৫ থেকে ৬০ দিন বয়সে তৃতীয়বার ইউরিয়া সার ব্যবহার করতে হয়। অন্যান্য সার যেমন-জিংক, বোরন, জিপসাম, ম্যাগনেসিয়াম, সালফার এই সারগুলো চাষ করার সময় ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও টিএসপি ও এমওপি চাষ করার সময় অর্ধেক এবং পরবর্তী ২০ থেকে ৩০ দিন বয়সে দ্বিতীয়বার প্রয়োগ করতে হবে।
ধান চাষের সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি কোনটি?
ধান চাষের সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো সাড়ি করে ধান লাগানো। কারণ সারি করে ধান রোপন করলে বিভিন্নভাবে উপকৃত হওয়া যায় যেমন-সার প্রয়োগ ও সেচ প্রদানের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়, জমি নিরানী দেওয়ার ক্ষেত্রে ও আলো বাতাস প্রবেশের ক্ষেত্রে লাইন করে রোপন করা ধানের জমিতে বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়। এছাড়া লাইন করে ধান রোপণ করলে উক্ত ধানে আলো বাতাস ভালোভাবে প্রবেশ করে, যার কারণে রোগ ও পোকা আক্রমণ খুবই কম হয়।
ধান চাষের জন্য উপযোগী মাটি কোনটি?
ধান চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী মাটি হচ্ছে পলি দোআশ। যদিও আমাদের দেশে এখন প্রায় সব ধরনের মাটিতেই ধান চাষ হচ্ছে। কিন্তু পলি দোআশ ধানের ফলন সবচেয়ে ভালো হয়। অর্থাৎ এই ধরনের মাটিতে অল্প পরিচর্যা করেও বেশি ফলন পাওয়া যায়। তাই যদি আপনি ভালো ফল পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে পলি দোআশ মাটিতে ধান চাষ করতে হবে।
বাংলাদেশের প্রধান ধান চাষের মৌসুম কোনটি?
বাংলাদেশের প্রধান ধান চাষের মৌসুম হচ্ছে আমন মৌসুম। কারণ এই মৌসুমে ধান চাষ করতে কৃষকের খরচ কম হয়। তাই অন্যান্য মৌসুমে অন্যান্য ফসল চাষ করলেও আমন মৌসুমে আমাদের দেশের সর্বোচ্চ পরিমাণে ধানের চাষ হয়ে থাকে। অর্থাৎ এই সময় আমাদের দেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়।যার কারণে জমিতে সেচ দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। আর আপনার নিশ্চয়ই জানেন ধানের জমিতে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। এই কারণে আমাদের দেশে আমন মৌসুমের সবচেয়ে বেশি ধান চাষ হয়ে থাকে।
শেষ কথাঃ কিভাবে আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধি করা যায়
আমাদের দেশ কৃষি প্রধান দেশ। এদেশের প্রায় ৭০% লোক কৃষির উপর
নির্ভরশীল। আর এই দেশের প্রধান ফসল হল ধান। যদিও আমাদের দেশে আমন
মৌসুমের সবচেয়ে বেশি ধান চাষ হয়। তারপরও দেশের কিছু কিছু অঞ্চলে আউশ ধান
ব্যাপকভাবে চাষ হয়, আপনারা অনেকেই জানতে চান কিভাবে আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধি করা
যায়, আবার অনেকেই জানতে চান আউশ ধানের হাইব্রিড জাত সমূহ কি কি।
আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধির জন্য আপনাকে সময় মত সকল ধরনের পরিচর্যা করতে
হবে। যেমন জমি নির্বাচন,জাত নির্বাচন, সার প্রয়োগ, সেচ প্রয়োগ, রোগ ও
পোকামাকড় দমন, আগাছা দমন ইত্যাদি।এসব পরিচর্যা আপনাকে নিয়মিত করতে হবে যেন
কোনভাবেই এগুলোর মধ্যে কোন একটি মিস হয়ে না যায়। ধানের ফলন বৃদ্ধির জন্য
পানি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যে কোন ধানের ফলন বৃদ্ধির জন্য ধানের জমিতে
সব সময় এক থেকে দুই ইঞ্চি পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
এছাড়া ধানের বয়স যখন ৫৫ থেকে ৬০ দিন হবে ঠিক সে সময় একটি ভালো মানের
ছত্রাকনাশক এর সাথে চিলেটেড জিংক অথবা এককভাবে জিব্রালিক এসিড স্প্রে
করা যায় তাহলে স্বাভাবিকের চেয়ে ফলন কিছুটা বেশি হয়। নিশ্চয়ই আজকের এই
আলোচনাটি আপনি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।আমাদের এই ওয়েবসাইটে নিয়মিত তথ্য
নির্ভর এরকম পোস্ট পাবলিস্ট করা হয়। সঠিক তথ্য সমৃদ্ধ পোস্ট পেতে আমাদের
সঙ্গে থাকুন।
এট্রাকশন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url