গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয় - গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি ওজন কমে
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয় অথবা গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি ওজন কমে, অনেক
গর্ভবতী মা এই প্রশ্নটি করে থাকেন। এই কথাগুলো প্রত্যেকটি গর্ভবতী মায়ের
জানা প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে উপকার হবে না ক্ষতি হবে এই বিষয়ে
বিস্তারিত এই পোস্টে আলোচনা করা হলো।
গর্ভাবস্থায় প্রত্যেকটি গর্ভবতী মায়ের ক্ষুধা সাধারণ সময়ের চেয়ে একটু বেড়ে
যায়। এ সময় তাদের বিভিন্ন রকম খাবার খেতে মন চায়। বিশেষ করে অনেকের মুড়ি খেতে
মন চায়। কিন্তু এ অবস্থায় মুড়ি খাওয়া যাবে কিনা, এটা নিয়ে অনেকেই দ্বিধা
দ্বন্দ্বের মধ্যে থাকেন। চলুন তাহলে গর্ভাবস্থায় মুড়ি খাওয়ার বিষয়টি নিয়ে
বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয় - গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি ওজন কমে
- গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয়
- গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি ওজন কমে
- গর্ভাবস্থায় মুড়ি খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় মুড়ি খাওয়ার অপকারিতা
- রাতে মুড়ি খেলে কি হয়
- মুড়ি খাওয়ার পর পানি খেলে কি হয়
- মুড়ির পুষ্টিগুণ উপাদান
- গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাবার তালিকা
- গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয় তা নিয়ে জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
- শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হতে পারে
গর্ভাবস্থায় মুড়ে খেলে কি হয়
গর্ভধারণ করা হলো একজন নারীর জন্য সবচেয়ে আনন্দঘন মুহূর্ত। কারণ প্রতিটি নারী
চায় গর্ভধারণ করতে। গর্ভ অবস্থায় প্রতিটি গর্ভবতী মায়ের বিভিন্ন ধরনের খাবার
খেতে মন চায়। এর মধ্যে একটি হচ্ছে মুড়ি। গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয়,
গর্ভবতী মায়েদের মনে এই প্রশ্নটি চলে আসে। তার কারণ হলো এই সময়ে একজন গর্ভবতী
মায়ের সব ধরনের খাবার খাওয়া যাবে না। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন চলে আসে গর্ভ
অবস্থায় মুড়ি খাওয়া যাবে কিনা।
আরো পড়ুনঃ
কলমি শাকের ক্ষতিকর দিক জানুন
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে উপকার হবে না উপকার হবে। কারণ কোন গর্ভবতী মা চায় না
তার বাচ্চার কোন ধরনের ক্ষতি হোক। তাই কোন কিছু খাওয়ার আগে কয়েকবার চিন্তা করে
নেয়। স্বাভাবিকভাবে অন্যান্য খাবার খাওয়ার পাশাপাশি একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য
মুড়ি খাওয়া নিরাপদ। একজন গর্ভবতী মা নিয়মিত মুড়ি খেলে তার শরীরে বিভিন্ন
ধরনের পুষ্টি উপাদান যোগ হয়। যা গর্ভ থাকা শিশুর বিভিন্ন
কাজে লাগে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়ঃ মুড়ির মধ্যে আছে বিভিন্ন রকম
পুষ্টি উপাদান। যার ফলে মুড়ি খাওয়ার কারণে মা ও শিশু দুজনেরই শরীরের
বিভিন্ন পুষ্টিউপাদান যোগ হয়। আর এসব পুষ্টি উপাদান যোগ হওয়ার কারণে মা ও শিশুর
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।
এনার্জি বাড়িয়ে দেয়ঃ মুড়ির মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি ও
শর্করা। যা একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরে দ্রুত এনার্জি ফিরিয়ে আনতে সাহায্য
করে। গর্ভ অবস্থায় প্রতিটি গর্ভবতী মায়ের শরীরে এনার্জি কম থাকে এবং শরীর
দুর্বল থাকে। তাই শরীরের এনার্জি বাড়াতে গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিন মুড়ি খাওয়া
উচিত।
হজম শক্তি বাড়িয়ে দেয়ঃ মুড়ির মধ্যে আছে অনেক ধরনের পুষ্টি
উপাদান। যা একজন গর্ভবতী মায়ের হজম শক্তি বাড়িয়ে দেয়। এবং বদ হজম হতে দেয়
না।
গ্যাস কমাতে সাহায্য করেঃ সাধারণত গর্ভ অবস্থায় একজন গর্ভবতী মা
বিভিন্ন ধরনের খাবার খেয়ে থাকেন। এতে করে তার পেটে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক
বেশি থাকে। তাই গর্ভ অবস্থায় মুড়ি খেলে গ্যাস, পেট জ্বালাপোড়া, বুক ব্যথা এই
সমস্যাগুলো আর থাকে না।
ভিটামিন বি এর অভাব পূরণ করেঃ গর্ভ অবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের
শরীরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি এর প্রয়োজন হয়। মুড়ির মধ্যে বিদ্যমান আছে
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ও খনিজ পদার্থ। যা একজন গর্ভবতী মা ও গর্ভে থাকা শিশুর
ভিটামিন বি ও খনিজ পদার্থের অভাব পূরণ করে থাকে।
হাড় ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করেঃ মুড়িতে আছে অনেক পরিমাণে ফাইবার,
আয়রন, প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম। যা একজন গর্ভবতী মায়ের হাড় ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য
করে এবং গর্ভে থাকা শিশুর হাড় গঠনে মুখ্য ভূমিকা রাখে।
বমি বমি ভাব দূর করেঃ গর্ব অবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের প্রধান
সমস্যা হচ্ছে বমি বমি ভাব। এ সময় গর্ভবতী মা যাই খান না কেন সবকিছুতেই বমি বমি
ভাব চলে আসে। গর্ভবতী মায়ের বমি ভাব দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে
মুড়ি। যদি কোন গর্ভবতী মা নিয়মিত মুড়ি খায় তাহলে তার বমি বমি ভাব দ্রুত কেটে
যাবে।
খনিজ উপাদানের ঘাটতি পূরণ করেঃ মুড়ির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে খনিজ
উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। যা একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই প্রয়োজন। তাই গর্ভবতী
মায়ের শরীরকে সুস্থ রাখতে নিয়মিত মুড়ি খেতে হবে।
তাহলে উপরের আলোচনা থেকে আপনারা জানতে পেরেছেন গর্ভ অবস্থায় মুড়ি খেলে কি
হয়।গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে গর্ভবতী মা ও গর্ভে থাকার শিশু দুজনেরই অনেক
বেশি উপকার হয়ে থাকে। তাই এক্ষেত্রে আমার পরামর্শ হচ্ছে একজন গর্ভবতী মা যেন
নিয়মিত এবং পরিমাণ মতো মুড়ি খায়। এতে করে সে বিভিন্নভাবে উপকৃত হবে। আশা করি
বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি ওজন কমে
মুড়ি হল আমাদের দেশের সবচেয়ে সহজলভ্য ও পুষ্টিকর একটি খাবার। মুড়ি কম দামের
একটি খাবার হলেও আমাদের দেশে অনেকেরই এই খাবারটি খুবই পছন্দের। বিশেষ করে শীতকালে
ও বর্ষাকালে মানুষের মুড়ি খাওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি বেড়ে যায়। তেমনই একজন
গর্ভবতী মায়ের বিভিন্ন সময়ে মুড়ে খেতে মন চায়। আবার অনেক গর্ভবতী মা মুড়ি
খেতে খুবই পছন্দ করেন। মুড়ি খেতে গিয়ে অনেক গর্ভবতী মায়ের মনে প্রশ্ন চলে আসে
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি ওজন কমে।
আরো পড়ুনঃ
চিয়া সিড খেয়ে কিভাবে ওজন কমাতে হয়
আমাদের দেশের সাধারণত ওজন কমানোর জন্য মুড়ি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ
মুড়ির মধ্যে ক্যালোরি খুবই কম থাকে। তাহলে কি নিয়মিত মুড়ি খাওয়ার ফলে একজন
গর্ভবতী মায়ের ওজন কমে যাবে। নিশ্চয়ই নয়, কারণ ওজন কমানোর জন্য মুড়ি খাওয়ার
পরামর্শ দিলেও, যদি কোন গর্ভবতী মা নিয়ম করে প্রতিদিন, প্রয়োজনের তুলনায় একটু
বেশি মুড়ি খায় তাহলে তার ওজন বেড়ে যায়। কারণ মুড়ির মধ্যে আছে
কার্বোহাইডেট যা গর্ভবতী মায়ের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খাওয়ার উপকারিতা
একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য মুড়ি খুবই উপকারী একটি খাবার। কারণ মুড়ির মধ্যে আছে
প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান যেমন-কার্বোহাইড্রেট, ক্যালোরি, প্রোটিন,
ফাইবার, পটাশিয়াম, থায়ামিন, ফসফরাস, নিয়াসিন ও ম্যাগনেসিয়াম। এজন্য কোন
গর্ভবতী মা নিয়মিত মুড়ি খেলে, তার শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্ট উপাদান যোগ হওয়ার
পাশাপাশি, গর্ভবতী মাকে বিভিন্ন রোগ বালাই থেকে মুক্ত রাখে। চলুন তাহলে জেনে
নেওয়া যাক গর্ভ অবস্থায় মুড়ি খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায়।
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খাওয়ার উপকারিতা সমুহঃ
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ মুড়ির মধ্যে অন্যান্য উপাদানের পাশাপাশি থাকে
কিছু পরিমাণ সোডিয়াম। যার কারণে অল্প পরিমাণ মুড়ি খেলেই আমাদের পেট ভরে যায়।
এছাড়াও মুড়ির মধ্যে কোলেস্টেরল এর পরিমাণ খুবই কম থাকে। যার ফলে মুড়ি খেলে
রক্তের চাপ কখনো বাড়ে না অর্থাৎ রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
আরো পড়ুনঃ
চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেঃ আমাদের দেশে ডাক্তারেরা
ডায়াবেটিস কে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য মুড়ি খাওয়ার পরামর্শ দেয়। তার কারণ
হলো মুড়ির মধ্যে সুগারের পরিমাণ খুবই কম এবং এটি শরীরের সুগারের পরিমাণ
দ্রুত কমাতে সাহায্য করে। তাই গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণ
করার জন্য মুড়ি খাওয়া উচিত।
হাড় মজবুত করেঃ মুড়ির মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, আয়রন
,প্রোটিন ,ক্যালসিয়াম, যা একজন গর্ভবতী মা ও শিশু দুজনেরই হার মজবুত করতে
সাহায্য করে। এবং মুড়ি গর্ভবতী মায়ের হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য
করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ মুড়ির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি
উপাদান বিদ্যমান থাকার কারণে কোন গর্ভবতী মা যদি প্রতিদিন নিয়ম করে নিয়মিত
পরিমানে মুড়ি খায়, তাহলে তার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। যার কারণে
ওই গর্ভবতী মায়ের রোগ ব্যাধি কম হয়।
পেটের সমস্যা দূর করেঃ গর্ভবতী অবস্থায় একজন গর্ভবতী মা বিভিন্ন
ধরনের খাবার খেয়ে থাকেন। এতে করে পেটের ভেতরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়
যেমন-গ্যাস্ট্রিক, পেটব্যথা, পেট জ্বালাপোড়া, বুকে ব্যথা বা বুক জ্বালাপোড়া
করা। যদি কোন গর্ভবতী মা নিয়মিত মুড়ি খায় তাহলে তার পেটের সকল সমস্যা দূর
হয়ে যায়।
মস্তিষ্কের উন্নতি সাধন করেঃ মুড়ির মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান
বিদ্যমান থাকায় যদি কোন গর্ভবতী মা নিয়মিত মুড়ি খায়, তাহলে তার ও গর্ভে থাকা
শিশুর মস্তিষ্কের উন্নতি সাধন হয়। কারণ একজন গর্ভবতী মা যে খাবারগুলো খাবেন
সেই খাবারের পুষ্টি উপাদান গুলো গর্ভে থাকা শিশুরা পাবেন।
শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করেঃ মুড়ির মধ্যে বিদ্যমান আছে ক্যালরি ও
শর্করা। একজন গর্ভবতী মায়ের স্বাভাবিকভাবেই গর্ভকালীন অবস্থায় শরীরের
শক্তি কম থাকে। যদি কোন গর্ভবতী মা নিয়ম করে মুড়ি খায় তাহলে তার শরীরের শক্তি
বেড়ে যায় অর্থাৎ শারীরিক দুর্বলতা কেটে যায়।
গর্ভবতী মায়ের ওজন নিয়ন্ত্রণ করেনঃ সাধারণত আমাদের দেশের ডাক্তাররা
ওজন কমানোর জন্য মুড়ি খাওয়ার পরামর্শ দেন। এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে
গর্ভবতী মায়ের ওজন কমাতে গিয়ে কোন সমস্যা হবে না তো। বিষয়টি পরিষ্কার করে বুঝে
নেওয়া যাক, গর্ভবতী মায়ের বিভিন্ন খাবার খেয়ে ওজন বেশি করা দরকার। তবে সেটা
অতিরিক্ত নয়, কারণ অতিরিক্ত ওজন বেড়ে গেলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। তাই
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য গর্ভবতী মাকে মুড়ি খাওয়া উচিত।
দাঁতের সমস্যা দূর করেঃ মুড়ির মধ্যে ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য
অনেক পুষ্টি উপাদানবিদ্যমান আছে। যার কারনে যদি কোন গর্ভবতী মায়ের
দাঁতের সমস্যা থাকে তাহলে তাকে নিয়মিত মুড়ি খেতে হবে। এতে করে গর্ভবতী
মায়ের দাঁতের সকল সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
বদ হজম দূর করেঃ গর্ভকালীন অবস্থায় একজন গর্ভবতী মাকে বিভিন্ন ধরনের
খাবার বিভিন্ন সময়, ঘন ঘন খেতে হয়। গর্ভ অবস্থায় এত খাবার খাওয়ার
ফলে অনেক সময় বদহজম হতে পারে। বদহজম দূর করার জন্য গর্ভবতী মাকে নিয়মিত মুড়ি
খেতে হবে। যদি কোন গর্ভবতী মা নিয়মিত মুড়ি খায় তাহলে তার এই সমস্যা হওয়ার
সম্ভাবনা একেবারেই থাকে না।
ঠান্ডা জনিত সমস্যার দূর করতে সাহায্য করেঃ গর্ভকালীন অবস্থায়
আরেকটি সমস্যা হচ্ছে ঠান্ডা জনিত সমস্যা। এ সময় অনেক গর্ভবতী মায়ের ঠান্ডা জনিত
সমস্যা লেগে থাকে। যদি কোন গর্ভবতী মা নিয়মিত মুড়ি খায় তাহলে তার ঠান্ডাজনীত
সমস্যা দ্রুত কেটে যায়।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করেঃ মুড়ি একজন গর্ভবতী মায়ের
হার্টের রক্ত চলাচল করতে সাহায্য করে ও অক্সিজেন সরবরাহ করতে সাহায্য করে। যার
কারণে গর্ভবতী মায়ের হার্টের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। অর্থাৎ
নিয়মিত মুড়ি খাওয়ার ফলে হার্ট এটাক হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করেঃ গর্ব অবস্থায় বিভিন্ন ধরনের খাবার
খাবার ফলে গর্ভবতীর মায়ের পেটে গ্যাস্ট্রিক জনিত সমস্যা হতে পারে। নিয়মিত মুড়ি
খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মায়ের গ্যাস্টিকের সমস্যা দ্রুত কেটে যায়। তাই একজন
গর্ভবতী মাকে নিয়মিত মুড়ি খাওয়া উচিত।
তাহলে উপরের আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারলাম গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি কি উপকার
পাওয়া যায়। তাই প্রতিটি গর্ভবতী মাকে প্রতিদিন নিয়ম করে মুড়ি খাওয়ার পরামর্শ
দিন। এতে করে ওই গর্ভবতী মা বিভিন্ন রোগবালের হাত থেকে রক্ষা পাবে এবং গর্ভের
শিশু বিভিন্নভাবে উপকৃত হবেন। তবে সেটা যেন প্রয়োজনের অতিরিক্ত না হয় সেদিকে
অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খাওয়ার অপকারিতা
পৃথিবীতে প্রত্যেকটা জিনিসই সুবিধা ও অসুবিধা দূটোই থাকে। তেমনি গর্ভাবস্থায়
মুড়ি খাওয়ার যেমন অনেক উপকারিতা আছে এর পাশাপাশি গর্ভ অবস্থায় মুড়ি খাওয়ার
কিছু অপকারিতাও আছে। কথায় আছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয়। যদি কোন
গর্ভবতী মা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি মুড়ি খেয়ে থাকে তাহলে অনেক ধরনের সমস্যা হতে
পারে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক গর্ভ অবস্থায় মুড়ি খেলে কি কি অপকার বা ক্ষতি
হতে পারে।
গর্ভ অবস্থায় মুড়ি খেলে কিডনিতে পাথর হতে পারেঃ গর্ভাবস্থায় মুড়ি
খাওয়ার উপকারিতা থাকলেও, অতিরিক্ত মুড়ি খাওয়ার ফলে কিডনিতে পাথর হতে
পারে। কারণ মুড়ির মধ্যে বিভিন্ন রকম খনিজ পদার্থ ও ক্যালসিয়াম
আছে। এসব খনিজ পদার্থ ও ক্যালসিয়াম কিডনিতে পাথর তৈরি করতে সাহায্য করে।
লবনের পরিমাণ বেশি থাকেঃ মুড়িতে লবণের পরিমাণ বেশি থাকে। তাই যদি
কোন গর্ভবতী মা প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত মুড়ি খেয়ে ফেলেন, তাহলে তার শরীরে
লবণের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। এতে করে ওই গর্ভবতী মা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন
হতে পারেন।
উচ্চ পরিমানে গ্লাইফেমাইক থাকেঃ মুড়ির মধ্যে উচ্চ পরিমাণে
গ্লাইফেমাইক থাকে। যা একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই ক্ষতিকর। যদি কোন গর্ভবতী মা
নিয়মিত প্রয়োজনে তুলনায় অতিরিক্ত মুড়ি খেয়ে ফেলেন। তাহলে ওই গর্ভবতী মা
বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় সম্মুখীন হতে পারেন।
ওজন কমে যেতে পারেঃ মুড়ির মধ্যে ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম থাকে। যার
কারণে আমরা ওজন কমানোর জন্য মুড়ি খাই। তবে গর্ভবতী মা যদি প্রতিদিন অনেক বেশি
পরিমাণে মুড়ি খেয়ে থাকেন। তাহলে খুব তাড়াতাড়ি তার ওজন কমে যাবে। এর জন্য একজন
গর্ভবতী মাকে প্রতিদিন পরিমাণ মতো মুড়ি খেতে হবে কখনো এর বেশি নয়।
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা হতে পারেঃ যদি কোন
গর্ভবতী মা গর্ভ অবস্থায় বেশি পরিমাণে মুড়ি খেয়ে ফেলেন, তাহলে তার
কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা হতে পারে। তাই নিয়ম করে প্রতিদিন মুড়ি খাওয়া
উচিত।
ব্যথা বাড়িয়ে দেয়ঃ যে সব গর্ভবতী মায়ের বুকে ব্যথা, হাড়ে ব্যথা
ও বাতের ব্যথা আছে, সেসব গর্ভবতী মায়ের জন্য মুড়ি খাওয়া উচিত নয়। কারণ মুড়ি
এসব ব্যথা বাড়াতে সাহায্য করে।
হাই পার টেনশনঃ যে সব গর্ভবতী মায়ের হাইপার টেনশন জনিত সমস্যা আছে।
সেসব মায়েদের মুড়ি খাওয়া উচিত নয়। কারণ গর্ব অবস্থায় এসব মায়েরা মুড়ি খেলে
তাদের হাইপারটেনশন আরো অনেক বেশি বেড়ে যায়।
ইউরিয়া মিশানোঃ আমরা বাজার থেকে যে মুড়িগুলো কিনে নিয়ে আসি এসব
মুড়ির মধ্যে ইউরিয়া মেশানো থাকে। কারণ যদি মুড়ি তৈরি করার সময় ইউরিয়া ব্যবহার
করা যায় তাহলে ওই মুড়ি হয় সবচেয়ে সুন্দর। কিন্তু ইউরিয়া গর্ভবতী মা সহ
যেকোনো ব্যক্তির জন্যই ক্ষতিকর। তাই বাজার থেকে কিনে আনা মুড়ি গর্ভবতী মায়ের
জন্য খাওয়া যাবে না।
তাহলে উপরের আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারলাম। একজন গর্ভবতী মা মুড়ি খেলে কি কি
ক্ষতি বা অপকার হতে পারে। এখানে একটি বিষয় আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে, সেটি হচ্ছে
যদি পরিমাণ মতো মুড়ি খান তাহলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়, কিন্তু যদি প্রয়োজনের
তুলনায় বেশি খেয়ে ফেলেন তাহলে এ ধরনের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি থাকে।
তাই একজন গর্ভবতী মা নিয়মিত মুড়ি খাবেন তবে সেটা বেশি নয়।
রাতে মুড়ি খেলে কি হয়
ওজন কমানোর জন্য আমরা অনেকেই রাতের বেলা অন্যান্য ভারী খাবার না খেয়ে মুড়ি
খায়। যাতে করে আমাদের ওজন কমে যায়। রাতের বেলা শুধু মুড়ে খেলে ওজন কমে যায় এ
কথাটি যেমন ঠিক, তেমনি শুধু মুড়ি খাওয়ার কারণে ওজন আপনার আবার বেড়েও যেতে পারে।
এছাড়াও রাতের বেলা মুড়ি খেলে আপনার শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।
রাতের বেলা মুড়ি খেলে কি হতে পারেঃ
- আপনার ওজন অনেক বেশি কমে যেতে পারে।
- গর্ভবতী মায়ের পেটের সমস্যা সহ বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।
- শুধু মুড়ি খাওয়ার জন্য বদ হজম জনিত সমস্যা হতে পারে
- রাতের বেলা শুধু মুড়ি বেশি খাওয়ার কারণে ওজন বেড়ে যেতে পারে।
- গর্ভবতী মায়ের রাতের বেলা শুধু মুড়ি খাওয়ার কারণে পুষ্টির অভাবজনিত সমস্যা হতে পারে।
তাহলে উপরের আলোচনা থেকে আমরা জানলাম রাতের বেলা মুড়ি খেলে কি হয়। যদি কোন
ব্যক্তি রাতের বেলা মুড়ি খেতে চান তাহলে সেটা খুবই পরিমাণে কম খেতে হবে। ক্ষুধা
পেটে শুধু মুড়ি খেতে গিয়ে অনেক বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেললে অনেক সমস্যার মুখোমুখি
আপনাকে হওয়া লাগতে পারে। তাই চেষ্টা করবেন সবজি সহ মুড়ি খাওয়ার জন্য। এতে করে
আপনার সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে এবং আপনার শরীরের জন্য অনেক বেশি
উপকারিতা বয়ে নিয়ে আসবে।
মুড়ি খাওয়ার পর পানি খেলে কি হয়
যেহেতু মুড়ি শুকনো জাতীয় খাবার। মুড়ি খাওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই পানির তৃষ্ণা
লেগে যায়। এবং আমরা অনেকেই মুড়ি খাওয়ার পর পানি খেয়ে ফেলি। মুড়ি
খাওয়ার পর পানি খেলে কি হয় এটাকি আমরা জানি। মুড়ি খাওয়ার পর পানি খেলে
উপকার হয় না ক্ষতি হয় এই বিষয়টি আমাদের সবারই জানা প্রয়োজন। চলুন তাহলে জেনে
নেওয়া যাক মুড়ি খাওয়ার পর পানি খেলে কি হতে পারে।
সাধারণত মুড়ি খাওয়ার পর পানির তৃষ্ণা পেলেও সঙ্গে সঙ্গে পানি খাওয়া যাবেনা।
কারণ মুড়ি খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যদি আপনি পানি খান তাহলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা
অনেক বেশি বেড়ে যেতে পারে। প্রয়োজনে মুড়ি খাওয়ার আগে পানি খেয়ে নিতে হবে।
এছাড়া আপনি যদি নিয়মিত মুড়ি খাওয়ার পর পানি খান তাহলে গ্যাস্টিকের সমস্যা এর
পাশাপাশি আলসার জনিত সমস্যা হতে পারে। তাই চেষ্টা করতে হবে মুড়ি খাওয়ার পর
যেন পানি খাওয়া না লাগে।
তাহলে নিশ্চয়ই আপনারা বুঝতে পেরেছেন মুড়ির খাওয়ার পর পানির খেলে কি হয়। যদি
আপনার মুড়ি খেতেই হয় তাহলে আপনাকে অবশ্যই মুড়ি খাওয়ার আগে পরিমাণ মতো পানি
খেয়ে নিতে হবে। তবে এই নয় যে আপনি পানির তৃষ্ণায় কাতর হয়ে যাচ্ছেন তারপরও
পানি খাবেন না। যদি অতিরিক্ত তৃষ্ণা লেগে যায় বা প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই
পানি খেতে হবে। তবে আমার মনে হয় যদি আপনি পানি আগেই খেয়ে নেন তাহলে
মুড়ি খাওয়ার পর খুব বেশি পানি খাওয়ার প্রয়োজন হবে না।
মুড়ির পুষ্টিগুণ উপাদান
মুড়ি একটি হালকা ও কম দামি খাবার হলেও এর মধ্যে বিদ্যমান আছে প্রচুর পরিমাণে
পুষ্টি উপাদান। যা একজন গর্ভবতী মা সহ সাধারণ মানুষের জন্য অনেক বেশি উপকারি। যদি
কোন গর্ভবতী মা নিয়মিত মুড়ি খেয়ে থাকেন, তাহলে তার বিভিন্ন ধরনের পুষ্ট
উপাদানের ঘাটতি পূরণ হবে এর পাশাপাশি গর্ভে থাকা শিশুর হাড় গঠনসহ বিভিন্ন
ধরনের উপকার হয়ে থাকে। এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে মুড়ির পুষ্টি
উপাদানগুলো আসলে কি কি।
প্রতি ১০০ গ্রাম মুড়ির মধ্যে যে পুষ্টি উপাদান গুলো বিদ্যমান রয়েছে তা
হলোঃ
- ক্যালরি আছে- ২০৪ গ্রাম
- চর্বি - ০.৫ গ্রাম
- স্যাচুরেটেড ফ্যাট - ০.১ গ্রাম
- ক্লোরোস্টেরল - ০ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট - ৯০ গ্রাম
- ফাইবার - ১.৭ গ্রাম
- প্রোটিন - ৬ গ্রাম
- ক্যালসিয়াম - ৬ মিলিগ্রাম
- ম্যাগনেসিয়াম - ২৫মিলিগ্রাম
- আয়রন - ৩১.৭ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন বি - ৬.০ মিলিগ্রাম
- থায়ামিন - ০.২১ মিলিগ্রাম
- রিবোফ্লোবিন - ০.০১ মিলিগ্রাম
- ইয়াসিন - ৪.১ মিলিগ্রাম
- ন্যাট্রিয়াম - ৩ মিলিগ্রাম
- ক্যালিয়াম - ১০৩ মিলি গ্রাম
তাহলে উপরের আলোচনা থেকে আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন মুড়ির মধ্যে কোন উপাদান
গুলো কি পরিমানে বিদ্যমান আছে। যা একজন গর্ভবতী মা সহ একজন সাধারণ মানুষের জন্য
অনেক বেশি উপকারী। নিয়মিত মুড়ি খাওয়ার ফলে প্রতিটি মানুষের শরীরে এসব
পুষ্টি উপাদান যোগ হয়। যার ফলে শক্তি বেড়ে যায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক
বেশি বেড়ে যায়। যার ফলে প্রতিটা গর্ভবতী মা সহ সকলেই থাকে সুস্থ ও সবল।
গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাবার তালিকা
একজন গর্ভবতী মায়ের সব সময় পুষ্টিকর খাবার খাওয়া দরকার। কারণ গর্ভ অবস্থায়
পুষ্টিকর খাবার খেলে একদিকে যেমন গর্ভবতী মায়ের উপকার হয় অন্যদিকে তেমনি গর্ভে
থাকা বাচ্চারও উপকার হয়। তাই একজন গর্ভবতী মাকে খাবার খাওয়ার সময় সেই সব
খাবারকে বেছে নিতে হবে যেসব খাবারে পুষ্টির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। এখন
স্বাভাবিকভাবে আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে গর্ভবতী মায়ের জন্য পুষ্টিকর
খাবার কি। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক গর্ভ অবস্থায় পুষ্টিকর খাবার তালিকা
সম্পর্কে।
গর্ভাবস্থায় যেসব পুষ্টিকর খাবার একজন গর্ভবতী মাকে নিয়মিত খেতে
হবেঃ
- মাছ (ইলিশ মাছ, বাটা মাছ, পুটি মাছ ও সামুদ্রিক মাছ গুলো খুব ভালো হয়)।
- বাদাম জাতীয় খাবার
- তেলহীন মাংস বা রেডমিট
- দুধ অথবা দুধ জাতীয় যেকোনো খাবার
- শর্করা জাতীয় খাবার যেমন-ভাত বা রুটি
- গারো সবুজ ও রঙ্গিন শাক
- রঙ্গিন ফল ও সবজি
- ডিম
- ওটস
- ভুট্টা
- নুডুলস
- পাস্তা
- সিরিয়াল বা কনফ্লেক্স
- রুটি
- আলু
- ভাত
- গাজর
- মিষ্টি আলু
- মিষ্টি কুমড়া
- পালং শাক
- টমেটো
- মটরশুটি
- ক্যাপসিকাম
- আম
- কলা
- কমলা
- মাল্টা
- জাম্বুরা
- বাঙ্গি
- পেয়ারা
- অ্যাভোকোডা
- খেজুর
- কিসমিস
- বিশুদ্ধ পানি
- ড্রাই ফ্রটস
- লাল আটা বা লাল চাল
- মাছের তেল
- চিয়া সিড
- মুরগির মাংস
- পাঁচ মিশালি ডাল
- টাটকা ও সবুজ শাকসবজি।
গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার খাওয়া যাবেনাঃ
- চা
- অ্যালকোহল
- কফি
- সিগারেট
- কাঁচা গরুর দুধ
- কাঁচা ডিম
- আনারস
- বেশি তৈলাক্ত জিনিস
- কাঁচা বা পাকা পেপে
- আঙ্গুর
- অল্প সিদ্ধ তরকারি
- ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা জিনিস
- এলার্জি বেড়ে যায় এমন খাবার
- পেটে গ্যাস হয় এমন খাবার
- বাসি কোন খাবার
- মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার
- চর্বি জাতীয় মাংস
- ভাজাপোড়া
- মাখন
- ঘি
- ডালডা
- চকলেট
- চিপস
- বিস্কুট
- কেক
- পেস্ট্রি
- আইসক্রিম
- পুডিং
- কোমল পানীয়
- কাঁচা দুধ দিয়ে তৈরি কোন খাবার
- কাঁচা বা ভালোভাবে সিদ্ধ না হওয়া মাছ,মাংস,দুধ,ডিম
- কাঁচা অথবা অর্ধ সিদ্ধ মাছ দিয়ে তৈরি খাবার যেমন-সুশি
- ভালোভাবে সিদ্ধ হয় না এমন খাবার ফ্রোজেন বা প্রক্রিয়াজাত মাংস যেমন-সালামি,পিপারনি
- অতিরিক্ত ক্যাফেইন জাতীয় পানীয়
- মদ বা অ্যালকোহল জাতীয় পানীয়
- অথবা হারবাল অথবা ভেষজ ঔষধ
গর্ভবতী অবস্থায় কোন কোন খাবার খেতে হবে এবং কোন কোন খাবার খাওয়া যাবে না তা
উপরে সুন্দরভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। যদি এই চাট অনুযায়ী কোন গর্ভবতী মা নিয়মিত
খাবার খায় তাহলে একদিকে যেমন তার ও তার শিশুর শরীরে পুষ্টি উপাদান যোগ হবে।
পাশাপাশি কোন সমস্যা মুখোমুখি হবে না। অর্থাৎ যে খাবার গুলো খেতে নিষেধ করা
হয়েছে এই খাবারগুলো না খেলে তেমন কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয় তা নিয়ে জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার বেশি খেতে হবে?
গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার বেশি খেতে হবে তাহলো- তাজা ও সবুজ জাতীয় সবজি যেমন-গাজর,মিষ্টি আলু মিষ্টি কুমড়া,পালং শাক, টমেটো,মটরশুটি,ক্যাপসিকাম। বিভিন্ন ধরনের হলুদ জাতীয় ফল যেমন-আম,কলা,কমলা,মাল্টা,জাম্বুরা,বাঙ্গি,পেয়ারা,অ্যাভোকোডা,খেজুর,কিসমিস। এছাড়াও প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে যেমন-দুধ,ডিম,মাংস, পাচঁ মিশালি ডাল এসব খাবার খেলে গর্ভের শিশুদের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয় ও বুদ্ধির বিকাশ খুব ভালো হয়।
প্রেগন্যান্সির প্রথম তিন মাসে কি কি খাওয়া উচিত?
প্রেগনেন্সি প্রথম কয়েক সপ্তাহ ভ্রুনের জন্মগত ত্রুটি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই এ সময় একজন গর্ভবতী মায়ের খাবারের ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে। এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ফলিক এসিড খেতে হবে। এতে করে বাচ্চার জন্মগত ত্রুটি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না এবং বাচ্চার বুদ্ধির বিকাশ ভালো হয়।
গর্ভবতী মা অবশ্যই লিচু খেতে পারবে তবে সেটা প্রতিদিন পরিমাণ মতো। প্রতিদিন একজন গর্ভবতী মা সর্বোচ্চ তিন থেকে চারটি লিচু খেতে পারবেন। এর চেয়ে বেশি লিচু খেলে যে কোন সময় যেকোনো ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাই গর্ভবতী মায়ের যদি লিচু খেতে মন চায় তাহলে অবশ্যই তিন থেকে চারটি লিচু খেতে পারবেন ।
গর্ভাবস্থায় একজন মাকে বিভিন্ন ধরনের ফল খেতে হয়। যেমন কলা,আম,কমলা,মাল্টা,জাম্বুরা,বাঙ্গি,পেয়ারা,এভোগোডা,খেজুর,কিসমিস। এছাড়াও গর্ভবতী মাকে নিয়মিত ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল খেতে হবে, কারণ গর্ভে থাকা শিশুর দাঁত মাড়ি ও হাড়ের বিকাশের জন্য প্রতিদিন একজন গর্ভবতী মাকে ৮৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি খেতে হবে।
শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হতে পারে
তাহলে উপরের আলোচনা থেকে আপনারা জানতে পারলেন গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয়,
এবং সেইসাথে জানতে পারলেন গর্ভ অবস্থায় মুড়ি খেলে কি ওজন কমে না বাড়ে। আশা করি
বিষয়গুলো আপনারা খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। গর্ভ অবস্থায় মুড়ি খাওয়ার আছে
নানারকম উপকারিতা ও অপকারিতা। যদি না জেনে অনেক বেশি মুড়ি খেয়ে ফেলেন
তাহলে যে কোন সময় আপনি ক্ষতির মুখোমুখি হতে পারেন।
একজন গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিন পরিমাণ মতো মুড়ি খাওয়া প্রয়োজন। যা গর্ভবতী মাকে
ও গর্ভে থাকা শিশুকে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করার মাধ্যমে উপকৃত করে থাকে।
আবার যদি বেশি পুষ্টির আশায় কেউ বেশি পরিমাণ মুড়ি খেয়ে ফেলে তাহলে তার ওজন কমে
গিয়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাই এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো পরামর্শ হচ্ছে
আপনি কতটুকু মুড়ি খাবেন বা অন্যান্য খাবার কি পরিমান খাবেন তা অবশ্যই ডাক্তারের
পরামর্শ নিয়ে খাবেন। কারণ গর্ভাবস্থায় কোন ভাবেই রিস্ক নেওয়া যাবে না।
আমাদের এই ওয়েবসাইটে সব সময় বিভিন্ন ধরনের তথ্যভিত্তিক পোস্ট করা হয়। যদি আপনি
এরকম তথ্য নির্ভর পোস্ট পেতে চান তাহলে নিশ্চয়ই আমাদের সঙ্গে থাকবেন। আশা করি
আপনি বিভিন্ন কিছু জানতে পারবেন আমাদের এই ওয়েবসাইট থেকে। আমাদের এই পোস্ট
সম্পর্কিত অথবা ওয়েবসাইট সম্পর্কিত কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট
করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
এট্রাকশন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url