চিয়া সিড খেলে কি ওজন কমে - চিয়া সিড এর উপকারিতা
বর্তমান সময়ে এসে সবাই স্বাস্থ্য নিয়ে বেশ চিন্তিত বিশেষ করে শারীরিক ওজন নিয়ে। ওজন কমানোর জন্য চিয়া সিড খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এটি একজন মানুষের দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে। চলুন তাহলে চিয়া সিড সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ চিয়া সিড খেলে কি ওজন কমে - চিয়া সিড এর উপকারিতা
- চিয়া সিড খেলে কি ওজন কমে
- চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা
- ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
- চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
- চিয়া সিড কিভাবে খেলে ওজন বাড়ে
- চিয়া সিড খাওয়ার সময়
- চিয়া সিড খাওয়ার অপকারিতা
- চিয়া সীড কিডনির জন্য কতটা ভালো
- চিয়া সিডের দাম ২০২৪
- শেষ কথাঃ ওজন কমে কি চিয়া সিড খেলে
চিয়া সিড খেলে কি ওজন কমে
চিয়া সিড খেলে কি ওজন কমে এ কথাটি আপনারা অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। আবার অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। সাম্প্রতিক সময়ে ওজন কমানোর জন্য চিয়া সিডের ব্যবহার অনেক বেশি বেড়ে গেছে। আপনিও হয়তোবা মনে মনে ভাবছেন আসলেই কি সিড খেলে ওজন কমে। সকল জল্পনার কল্পনার অবসান ঘটিয়ে চলুন জেনে নেওয়া যাক চিয়া সিড খেলে ওজন কমে না বাড়ে।
আরো পড়ুনঃ চুলকানিতে নিম পাতার সঠিক ব্যবহার
ওজন বৃদ্ধি এখন আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় একটি সমস্যা। প্রতিদিন মানুষের ওজন
বেড়েই চলছে। ওজন কমানোর জন্য আমরা অনেক কিছু করেও ব্যর্থ হচ্ছি। এমনকি ওজন কমাতে
গিয়ে শরীর দুর্বলতায় ভুগছি। কিন্তু যদি প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন কমানো যায় তাহলে
কেমন হয়। প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন কমানোর জন্য সবচেয়ে ভালো একটি উপাদান হচ্ছে
চিয়া সীড। তাইতো পুষ্টিবিদরা ডায়েট করার জন্য খাবারের সঙ্গে চিয়া সিড রাখার
পরামর্শ দিচ্ছেন।
তাহলে আমরা জানতে পারলাম চিয়া সিড খেলে ওজন কমে। অর্থাৎ পুষ্টিবিদরা ওজন
কমানোর জন্য চিয়া সিড খাওয়ার পরামর্শ দেন। তবে সেটা নিয়ম মেনে না খেলে ওজন
কমার বিপরীতে ওজন বাড়তে পারে। অর্থাৎ চিয়া সিড যেমন ওজন কমাতে সাহায্য করে আবার
তেমনি ওজন বাড়াতেও সাহায্য করে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক ওজন কমাতে চিয়া সিড
এর ব্যবহার সম্পর্কে।
- চিয়া সিড এর মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য আঁশ ও অনেক বেশি প্রোটিন। যা প্রত্যেকটি মানুষের ক্ষুধা কমে দিতে সাহায্য করে। কারণ খাদ্য আঁশ ও প্রোটিন একজন মানুষের পেট দীর্ঘক্ষণ ভরে রাখতে সাহায্য করে।, যার কারণে মানুষ খাবার কম খায়। অর্থাৎ খাবার কম খাওয়ার কারণে তার ওজন কমে যায়।
- চিয়া সিডের মধ্যে আছে ৯.৭৫ গ্রাম খাদ্য আস, ৪.৬৯ গ্রাম প্রোটিন এবং খাদ্য শক্তির পরিমাণ আছে ১৩৮ ক্যালোরি। যে কারণে চিয়া সিড খেয়ে ক্ষুধার ভাব কমে গেলেও এটি শরীরে খাদ্য শক্তি সরবরাহ করে থাকে। আর এভাবেই একজন মানুষের ওজন কমে যায়।
- চিয়া সিডের সাথে যদি লেবু মিশিয়ে খাওয়া যায়, তাহলে শরীরের চর্বি অনেক কমে যায়। আর চর্বি কমে যাওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই ওজন কমে যায়।
- সকালের নাস্তায় যদি দুধ ও দই এর সাথে চিয়া সিড খাওয়া যায় তাহলে নিশ্চিত ধরে রাখুন আপনার ওজন কমে যাবে। কারণ সকালে এই খাবারগুলো খেলে শরীর থেকে চর্বি একেবারে নির্মূল হয়ে যায়। যার কারণে ওজন কমে যায়।
- ওজন কমানোর জন্য প্রতিদিন ওটস এর সাথে চিয়া সিড খান দেখুন আপনার শরীরের ওজন এমনিতেই অনেক কমে যাবে।
- আধা ঘন্টা পরিস্কার পানিতে চিয়া সিড ভিজিয়ে রেখে নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের ওজন অনেকাংশে কমানো যায়।
- চিয়া সিডের পাশাপাশি যদি আপনি খাবার খাওয়া পরিমাণে কমে দেন তাহলে নিশ্চিত ভাবে আপনার ওজন কমে যাবে। বিশেষ করে যেসব খাবারে ক্যালরি বেশি আছে এসব খাওয়ার পরিমানে খুবই কম খেতে হবে। এবং যেসব খাবারে ক্যালরি কম আছে এসব খাবার বেশি করে খেতে হবে। এর পাশাপাশি যদি আমরা চিয়া সিড খায় তাহলে নিশ্চিত ভাবে আমাদের প্রত্যেকের ওজনে কমে যাবে।
চিয়া সিডের স্বাস্থ্য গুন সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাকঃ
- রক্তের চাপ কমাতে সাহায্য করে চিয়া সিড অর্থাৎ আপনার যদি উচ্চ রক্তচাপ থাকে তাহলে আপনি নিশ্চিন্তে চিয়া সিড খেতে পারেন।
- যদি আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যর রোগ থাকে, তাহলে আজই আপনি চিয়া সিড খাওয়া শুরু করুন। কারণ চিয়া সিড কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ রোগ দূর করতে সাহায্য করে।
- এটি মানুষের সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। যার ফলে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। অর্থাৎ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য চিয়া সিড এর গুরুত্ব অপরিসীম।
- চিয়া সিড রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে না এবং রক্ত পাতলা করতে সাহায্য করে। যার কারনে আপনার শরীর থাকে সবসময় হালকা।
- আপনার শরীরের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ রাখতে চিয়া সিড খুবই ভালো কাজ করে থাকে। তাই যদি আপনি নিয়মিত চিয়া সিড খান তাহলে আপনার শরীরের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ থাকবে।
- চিয়া সিড হচ্ছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ একটি খাবার, যার কারণে এটি মানুষের ইনফ্লামেশন কমায়।
এবার জেনে নেওয়া যাক চিয়া সিড যেভাবে খেলে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হবেঃ
- যেকোনো সালাতের সাথে মিশিয়ে সহজেই চিয়া সিড খাওয়া যায়।
- গুড়া করে ময়দার মতো তৈরি করে অন্য খাবারের সাথে মিশিয়ে চিয়া সিড খাওয়া যায়।
- ২০ থেকে ৩০ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেগুলোকে লেবুর রসের সাথে খেলে সবচেয়ে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। এছাড়াও আপনি মধু বা অন্যান্য খাবারের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
- দুধ, দই ও ওঠমিল কমপ্লেক্স এর সঙ্গে চিয়া সিড মিশিয়ে খাওয়া যায়।
- যদি আপনার নিয়মিত সুদি খাওয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে এর সঙ্গে আপনি চিয়া সিড যোগ করে একসঙ্গে খেতে পারেন।
- কুসুম গরম পানিতে আধাঘন্টা ভিজিয়ে রেখে সকাল বেলা খালি পেটে অথবা রাতে ঘুমানোর আগে চিয়া সিড খেলে খুবই উপকার পাওয়া যায়।
- দুই কাপ নারিকেলের পানি নিতে হবে, এরপর এর মধ্যে আপনার পছন্দ অনুযায়ী ফলের রস নিতে হবে, এরপর দুই থেকে তিন চামিজ চিয়া সিড নিয়ে এর মধ্যে মিশে নিতে হবে। উক্ত মিশ্রণটি ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর খেয়ে নিতে হবে।
চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা
- চিয়া সিড-এ আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। যদি আপনি নিয়মিত চিয়া সিড খান তাহলে আপনার শরীরের রোগ বালাই এমনিতেই কমে যাবে।
- চিয়া সিড মানুষের শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। যার ফলে কোন ব্যক্তি নিয়মিত চিয়া সিড খেলে তার শরীরের বিভিন্ন রোগ ব্যাধি কম হয়।
- যদি আপনার পেটে প্রচুর পরিমাণে গ্যাস হয় এবং পেট ব্যাথা হয় তাহলে আপনি নিশ্চিন্তে চিয়া সিড খেতে পারেন। কারণ চিয়া সিড গ্যাস কমাতে সাহায্য করে সেই সাথে পেটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- চিয়া সিড-এ বিদ্যমান আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। যা মানুষের হাড় গঠনের সাহায্য করে ও হারকে মজবুত করে। তাই হারকে মজবুত রাখতে নিয়মিত চিয়া সিড খাবেন।
- চিয়া সিড মানুষের মেটাবলিক সিস্টেমকে উন্নত করে। আর যদি কারো মেটাবোলিক সিস্টেম উন্নত হয় তাহলে তার ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকে বা বাড়ে না। তাই ওজন কমানোর জন্য বা নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য নিয়মিত চিয়া সিড খাবেন।
- চিয়া সিডের একটি বিশেষ গুণ হচ্ছে। এটি মানুষের রক্তে ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। যার ফলে যদি কোন ব্যক্তি নিয়মিত চিয়া সিড খায় তাহলে তার ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। আর যদি ডায়াবেটিস এর রোগী নিয়মিত খায় তাহলে তার সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
- চিয়া সিড-এ এমন কিছু উপাদান আছে যা হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। যার কারণে নিয়মিত চিয়া সিড খেলে হার্ট জনিত সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে।
- রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে চিয়া সিড গুরুত্ব অপরিসীম। অর্থাৎ নিয়মিত খাওয়ার ফলে রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে। রক্তে চাপ কম থাকে। অর্থাৎ শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- চিয়া সিডে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকার কারণে একে মানুষের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। তাই য়া সিট নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমে আপনার শরীরের শক্তি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হতে পারে।
- চিয়া সিড মানুষের কর্ম ক্ষমতা কে স্বাভাবিকের চেয়ে বাড়িয়ে দেয়। যদি কোন ব্যক্তি নিয়মিত চিয়া সিড খায় তাহলে তার কর্মক্ষমতা স্বাভাবিকের চেয়ে একটু হলেও বেড়ে যায়।
- নিয়মিত চিয়া সিড খেলে কোলন পরিষ্কার থাকে। যার কারনে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক অংশে কমে যায়। অর্থাৎ কোলন ক্যান্সারের হাত থেকে রক্ষার জন্য নিয়মিত চিয়া সিড খেতে হবে।
- ক্যান্সার প্রতিরোধে চিয়া সিড খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যদি কোন ব্যক্তি নিয়মিত চিয়া সিড খান তাহলে তার ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
- চিয়া সিড মানুষের হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। যদি আপনি নিয়মিত চিয়া সিট খান তাহলে আপনার স্বাভাবিকের চেয়ে হজম শক্তি বেড়ে যাবে।
- চিয়া সিড শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে হাঁটু ও জয়েন্টের ব্যথা দ্রুত দূর করতে সাহায্য করে থাকে।
- ত্বক ও চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে। যদি আপনি নিয়মিত চিয়া সিড খান তাহলে তো চুল নিশ্চিত ভাবে আপনার ভালো থাকা সম্ভাবনা থাকবে।
- চিয়া সিড মানুষের শরীরের শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ করে রক্তের চাপ কমাতে সাহায্য করে। যদি চিয়া সিড বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলেন। তাহলে আপনার রক্তের চাপ কমে আপনি দুর্বল হয়ে যেতে পারেন। তাই প্রয়োজনের অতিরিক্ত কখনোই চিয়া সিড খাবেন না।
- যাদের শরীরে এলার্জি বেশি আছে তারা চিয়া সিড না খাওয়াই ভালো। কারণ খেলে এলার্জি অনেক বেশি বেড়ে যায়। যার ফলে চুলকানি ফুসকুরি এই জাতীয় সমস্যা শরীরে বেশি দেখা যায়।
- চিয়া সিডে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। যা বেশি পরিমাণ খাওয়ার কারণে ডায়রিয়া, বমি ভাব ও পেট খারাপ হতে পারে। তাই নিয়ম মেনে অবশ্যই চিয়া সিড খেতে হবে।
- চিয়া সিড বেশি খাওয়ার কারণে মেয়েদের প্রোটেস্ট ক্যান্সার ও স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই মেয়েদের ক্ষেত্রে অবশ্যই নিয়ম মেনে পরিমান মত চিয়া সিড প্রতিদিন খেতে হবে
- গর্ভবতী মহিলারা চিয়া সিড খেতে পারবেন কিনা তা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। চিয়া সিডের উপকারিতা দেখে ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়ে কখনোই গর্ভবতী মহিলারা চিয়া সিড খাবেন না।
ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
- সকালের নাস্তায় যদি আপনি দুধ ও দই এর সাথে চিয়া সিড রাখেন তাহলে দ্রুত ওজন কমাতে আপনাকে সাহায্য করবে এই খাবারটি। তাই ওজন কমাতে সকালের নাস্তায় দুধ, দুই ও চিয়া সিড একসঙ্গে মিশিয়ে খাবেন।
- আমাদের দেশের প্রায় অধিকাংশ মানুষেরই সালাত একটি পছন্দের খাবার। সালাত এর সাথে আপনি চিয়া সিড মিশিয়ে খেতে পারেন। এভাবে খেলেও আপনার শরীরের ওজন কমে যাবে।
- কুসুম গরম পানিতে ১০ থেকে ২০ মিনিট চিয়া সিড ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে অথবা রাত্রিতে ঘুমানোর আগে চিয়া সিড নিয়মিত খেয়ে দেখুন। দ্রুত ওজন কমতে সাহায্য করবে এই পদ্ধতিটি।
- গুড়া করে ময়দা বানিয়ে অন্য খাবারের সাথে মিশিয়ে খেলে দ্রুত ওজন কমতে শুরু হয়। তাই যদি আপনি চিয়া সিড এভাবে নিয়মিত খেতে পারেন তাহলেও আপনার ওজন তাড়াতাড়ি কমে যাবে।
- মধু ও চিয়া সিড একত্রে মিশিয়ে খেলে দ্রুত ওজন কমতে সাহায্য করে। মধু এমনিতেই আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। সেই সাথে যদি চিয়া সিড খাওয়া যায় তাহলে তো কোন কথাই নেই।
- আমাদের মধ্যে অনেকেই পুডিং খুব পছন্দ করেন। এর সাথে যদি চিয়া সিড মিশিয়ে নিয়মিত খাওয়া যায় তাহলে দ্রুত ওজন কমে যায়।
- দিনের মধ্যে যেকোনো সময় যদি আদা পানিতে ভিজিয়ে রেখে উক্ত পানির সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে খেতে পারেন তাহলে নিশ্চিত ধরে রাখুন আপনার ওজন কমে যাবে।
- ওটস এর সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে খেলে ওজন তাড়াতাড়ি কমে যায়। যদি নিয়মিত আপনি ওটস ও চিয়া সিড একত্রে মিশিয়ে খেতে পারেন তাহলে আপনার ওজন নিশ্চিত ভাবে কমে যাবে।
- চিয়া সিড পরিষ্কার পানিতে ২০ থেকে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে আপনার পছন্দের যেকোনো একটি ফলের রসের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে করে আপনার শরীরের দ্রুত ওজন কমে যাবে।
- চিয়া সিড থেকে বেশি উপকার পেতে হলে আপনাকে সকালবেলা পরিষ্কার পানিতে ২০ থেকে ৩০ মিনিট চিয়া সিড ভিজিয়ে রেখে সেই পানি সহ চিয়া সিড খেয়ে নিতে হবে।অথবা এই নিয়মে আপনি রাতের বেলা ঘুমানোর আগে খেতে পারেন। এতে করে আপনি সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন।
- হালকা কুসুম গরম পানিতে চিয়া সিড ১০ থেকে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রেখে। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে চিয়া সিড যদি খেতে পারেন তাহলে আপনার জন্য সবচেয়ে বেশি কার্যকর হতে পারে এই পদ্ধতি। এভাবে খেলে সবচেয়ে দ্রুত কাজ করবে আপনার শরীরের জন্য। তবে এটি রাত্রেবেলা ঘুমানোর আগেও আপনি খেতে পারবেন।
- কমবেশি আমরা সবাই সালাত পছন্দ করি। আপনার পছন্দের সালাতের সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে খেলে দ্রুত উপকার পাওয়া যাবে।
- দুধ এর সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে খেয়ে দ্রুত উপকার পাওয়া যায় বিভিন্ন রোগের জন্য। তাই যদি আপনি বেশি উপকার পেতে চান তাহলে দুধের সাথে মিশিয়ে খাবেন।
- কমবেশি আমরা দই অনেকেই পছন্দ করি। দই এর সাথে আপনি চিয়া সিড মিশিয়ে খেতে পারেন আপনার উপকারের জন্য।
- বিভিন্ন রকম ফলের রসের সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়। তাই নিয়ম হল বিভিন্ন ফলের রস, সেটা হতে পারে এক অথবা একাধিক। এর সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে নিয়মিত খেতে হবে।
- পুডিং হলো সবার পছন্দের একটি খাবার। পুডিং এর সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে খেতে হবে অধিক উপকার পাওয়ার জন্য।
- আটা ও ময়দা দিয়ে আমরা বিভিন্ন খাবার তৈরি করে থাকি। এই আটা ও ময়দার মধ্যে চিয়া সিড দিয়ে খাবার তৈরি করে খাওয়া যেতে পারে। যা আপনার শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
- চিয়া সিড ওটস্ এর সাথে মিশিয়ে নিয়মিত খাওয়া যেতে পারে। যদি আপনি ওটস্ পছন্দ করেন তাহলে এর সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে খেয়ে দেখুন দ্রুত উপকার পেয়ে যাবেন।
- মধু হচ্ছে আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার। মধুর সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে খেলে আরো অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়। তাই নিয়মিত মধুর সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
- চিয়া সিড মানুষের শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়। যার কারনে কোন ব্যক্তি নিয়মিত চিয়া সিড খেলে তার শরীরের বিভিন্ন রোগ ব্যাধি কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- যদি আপনার পেটে প্রচুর পরিমাণে গ্যাস হয় এবং পেট ব্যাথা করে তাহলে আপনি নিশ্চিন্তে চিয়া সিড খেতে পারেন। কারণ চিয়া সিড গ্যাস কমাতে সাহায্য করার পাশাপাশি পেটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- চিয়া সিড-এ আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। যদি আপনি নিয়মিত চিয়া সিড খান তাহলে আপনার শরীরের রোগ বালাই কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- চিয়া সিড -এ বিদ্যমান আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। যা মানুষের হাড় গঠনের সাহায্য করে ও হারকে মজবুত করে। আপনার হারকে শক্ত ও মজবুত রাখার জন্য নিয়মিত চিয়া সিড খাবেন।
- চিয়া সিড এর একটি বিশেষ গুণ হচ্ছে। এটি মানুষের রক্তে ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। যার ফলে যদি কোন ব্যক্তি নিয়মিত চিয়া সিড খায় তাহলে তার ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। আর যদি ডায়াবেটিস রোগী নিয়মিত খায় তাহলে তার সুগার নিশ্চিতভাবে নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
- চিয়া সিড মানুষের মেটাবলিক সিস্টেমকে উন্নত করে। আর যদি কারো মেটাবোলিক সিস্টেম উন্নত হয় তাহলে তার ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকে বা বাড়ে না। তাই ওজন কমানোর জন্য বা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নিয়মিত চিয়া সিড নিয়ম করে খেতে পারেন।
- চিয়া সিড-এ এমন কিছু উপাদান আছে যা হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। যার কারণে নিয়মিত চিয়া সিড খেলে হার্ট জনিত সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। অর্থাৎ চিয়া সিড খেলে আপনার হার্ট ভালো থাকবে।
- চিয়া সিডে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকার কারণে এটি মানুষের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। তাই চিয়া সিড নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমে আপনার শরীরের শক্তি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হতে পারে।
- চিয়া সিড মানুষের কর্ম ক্ষমতা কে স্বাভাবিকের চেয়ে বাড়িয়ে দেয়। যদি কোন ব্যক্তি নিয়মিত চিয়া সিড খায় তাহলে তার কর্মক্ষমতা স্বাভাবিকের চেয়ে একটু হলেও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে চিয়া সিড এর গুরুত্ব অপরিসীম। অর্থাৎ চিয়া সিড নিয়মিত খাওয়ার ফলে রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই রক্তের চাপ কমাতে ও শরীরকে সুস্থ রাখতে নিয়মিত খেতে পারেন।
- নিয়মিত চিয়া সিড খেলে কোলন পরিষ্কার থাকে। যার কারনে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। অর্থাৎ কোলন ক্যান্সারের হাত থেকে রক্ষার জন্য নিয়মিত চিয়া সিড খেতে হবে পরিমাণ মতো।
- চিয়া সিড মানুষের হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। যদি আপনি নিয়মিত চিয়া সিড খান তাহলে আপনার স্বাভাবিকের চেয়ে হজম শক্তি বেড়ে যাবে নিশ্চিতভাবে।
- চিয়া সিড শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ব্যথা, বিশেষ করে হাঁটু ও জয়েন্টের ব্যথা দ্রুত দূর করতে সাহায্য করে থাকে।
- ক্যান্সার প্রতিরোধে চিয়া সিড খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যদি কোন ব্যক্তি নিয়মিত চিয়া সিড খান তাহলে তার ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যায়।
- ত্বক ও চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে। যদি আপনি নিয়মিত চিয়া সিড খান তাহলে তো চুল নিশ্চিত ভাবে আপনার ভালো থাকা সম্ভব থাকে।
চিয়া সিড কিভাবে খেলে ওজন বাড়ে
চিয়া সিড খাওয়ার সময়
- যেমন আপনি যদি সকালের নাস্তার সাথে চিয়া সিড খান তাহলে সেটি আপনাকে সকালে খেতে হবে। কারণ যেহেতু আপনি সকালের নাস্তার সঙ্গে এচিয়া সিড খাবেন। সকালের নাস্তা তো আপনি দুপুরে করবেন না। সেই অনুযায়ী আপনাকে এটি সকালেই খেতে হবে।
- আবার যদি আপনি সালাতের সঙ্গে মিশিয়ে খান তাহলে দিনের যেকোনো সময়, খাবার যখন খাবেন, তখন আপনি সালাতের সাথে মিশিয়ে খেতে পারবেন।
- যদি আপনি দুধ বা দই এর সাথে মিশিয়ে খান। তাহলে আপনাকে চিন্তা করতে হবে আপনি কোন সময় দুধ ও দই খেতে বেশি পছন্দ করেন। সেই সময় আপনাকে ওই খাবারের সাথে মিশিয়ে খেতে হবে।
- যদি আপনি গরম পানির সাথে মিশিয়ে খান তাহলে সবচেয়ে ভালো হচ্ছে সকাল বেলা খালি পেটে খাওয়া। অথবা রাত্রের বেলায় ঘুমানোর আগে আপনি খেতে পারেন।
- এমন অনেক মানুষ আছে সকাল বেলা খালি পেটে নরমাল পানি খেয়ে থাকে। এই নরমাল পানির সাথে আপনি চিয়া সীড মিশিয়ে খেতে পারেন সকাল বেলা।
- যদি আপনি পুডিং এর সাথে মিশিয়ে খান তাহলে যে সময় আপনাকে পুডিং খেতে ভালো লাগে সেই সময় আপনি চিয়া সিড এর সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
- চিয়া সিড আপনি যদি পাউডার বানিয়ে খান তাহলে আটা ময়দা দিয়ে যে কোন খাবার তৈরি করার সময় এদের সাথে মিশিয়ে আপনি চিয়া সিড খেতে পারবেন।
চিয়া সিড খাওয়ার অপকারিতা
- যাদের শরীরে এলার্জি অনেক বেশি আছে তাদের জন্য চিয়া সিড না খাওয়াই ভালো। কারণ চিয়া সিড খেলে এলার্জি অনেক বেশি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যার ফলে চুলকানিসহ ফুসকুরি এই জাতীয় সমস্যার শরীরে বেশি দেখা যায়।
- চিয়া সিড মানুষের শরীরের শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তের চাপ কমাতে সাহায্য করে। যদি কেউ চিয়া সিড বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলেন। তাহলে আপনার রক্তের চাপ কমে যেয়ে আপনি দুর্বল হয়ে যেতে পারেন। তাই প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত চিয়া সিড না খাওয়াই ভালো।
- চিয়া সিড বেশি খাওয়ার কারণে মেয়েদের প্রোটেস্ট ক্যান্সার ও স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই মেয়েদের ক্ষেত্রে অবশ্যই নিয়ম মেনে পরিমান মত চিয়া সিড প্রতিদিন খেতে হবে না হলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
- গর্ভবতী মহিলারা চিয়া সিট খেতে পারবেন কিনা তার জন্য অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। চিয়া সিড এর উপকারিতা দেখে ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়ে কখনোই গর্ভবতী মহিলারা চিয়া সিড খাবেন না। এতে করে বড় ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন।
- চিয়া সিড আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। যা বেশি পরিমাণ খাওয়ার কারণে ডায়রিয়া, বমি ভাব ও পেট খারাপ হতে পারে। অতিরিক্ত চিয়া সিড খাওয়ার ফলে আপনার এই সমস্যাগুলো বেশি হতে পারে। তাই নিয়ম মেনে অবশ্যই চিয়া সিড খেতে হবে।
চিয়া সীড কিডনির জন্য কতটা ভালো
- চিয়া সিড এর মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও ফাইবার। কিডনিকে ভালো রেখে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে হচ্ছে চিয়া সিড।
- নিয়ম করে পরিমাণ মতো যদি চিয়া সিড খাওয়া যায় তাহলে কিডনি রোগের জন্য এটি খারাপ নয় বরং এটি ভালো উপকার বয়ে নিয়ে আসতে পারে।
- কিডনি রোগের কারণে আপনি যদি শারীরিকভাবে দুর্বল হন তাহলে এটি আপনার জন্য একটি বেস্ট অপশন হতে পারে। কারণ চিয়া সিড শরীরকে দ্রুত শক্তি প্রদান করতে সাহায্য করে।
- চিয়া সিড রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে কিডনি সমস্যার দ্রুত ভালো করতে সাহায্য করে।
- চিয়া সিড-এ প্রচুর পরিমাণে ফসফরাস বিদ্যামান থাকে। তাই এটি কিডনি রোগীর জন্য উপযুক্ত নয়। অর্থাৎ কিডনি রোগীর শরীরে ফসফরাসের নিয়ন্ত্রণ থাকা জরুরী। কিন্তু আপনি যদি কিডনি রোগী হওয়া সত্ত্বেও চিয়া সিড খান তাহলে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি হতে পারে।
- কিডনি রোগীর শরীরে ফসফরসে পরিমাণ বেড়ে গেলে হাড় গুলো দুর্বল হয়ে যায়। যার ফলে যে কোন সময় রোগীর হাড় ভেঙ্গে যেতে পারে।
- চিয়া সিডের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আছে পটাশিয়াম। কিন্তু একজন কিডনি রোগীর জন্য পটাশিয়াম খুবই কম পরিমাণ প্রয়োজন। কিডনি রোগী হওয়া সত্ত্বেও যদি চিয়া সিড খান তাহলে আপনার হার্টের সমস্যা হতে পারে অথবা প্যারালাইজড হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।
চিয়া সিডের দাম ২০২৪
চিয়া সিড সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
ওজন কমানোর জন্য চিয়া সিড কিভাবে খেতে হবে?চিয়া সিডের অপকারিতা কি?
চিয়া সিড এর কাজ কি?
এট্রাকশন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url