ভিডিও না বানিয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম - ইউটিউব শর্টস থেকে ইনকাম
ভিডিও না বানিয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম যদি এমন হয় অথবা ইউটিউব শর্টস থেকে ইনকাম প্রতি মাসে লক্ষ টাকা তাহলে কেমন হয়।বর্তমান সময়ে
ইউটিউব হলো ইনকামের অন্যতম একটি প্ল্যাটফর্ম, এই প্লাটফর্ম ব্যবহার করে যে কোন
ব্যক্তি ভিডিও না বানিয়েও লক্ষাধিক টাকা আয় করতে পারেন প্রতি মাসে, এখন
আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে।
এটি কিভাবে সম্ভব, সত্যিই কি ভিডিও না বানিয়ে ইউটিউব থেকে লাখ ইনকাম করা যায়, হ্যাঁ প্রিয় পাঠক সত্যিই ইউটিউবে ভিডিও না বানিয়েও লাখ টাকা আয় করা যায়, চলুন এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
সূচিপত্রঃভিডিও না বানিয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম - ইউটিউব শর্টস থেকে ইনকাম
- ভিডিও না বানিয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম
- ইউটিউব শর্টস থেকে ইনকাম
- ইউটিউব থেকে মাসে কত আয় করা যায়ঃ
- ইউটিউব মনিটাইজেশন পলিসি
- কত ভিউ হলে ইউটিউব কত টাকা দেয়
- কপিরাইট ফ্রি ভিডিও কোথায় পাবেন
- ইউটিউব থেকে আয় করার পাঁচটি উপায়
- যেভাবে ভিডিও আপলোড করলে ইউটিউব থেকে টাকা আয় করতে পারবেন
- শেষ কথাঃইউটিউবে ইনকাম ভিডিও না বানিয়ে
ভিডিও না বানিয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম
ভিডিও না বানিয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম হলো বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সহজ একটি উপায়। এই পদ্ধতিতে দেশের লাখো যুবক-যুবতী প্রতিমাসে লাখ টাকা আয় করা শুরু করেছেন। বর্তমান সময়ে ইউটিউব থেকে নতুন একটি আপডেট এসেছে। যেখানে ভিডিও না বানিয়ে ইউটিউব লাখ থেকে ইনকাম করা যায়।
কিভাবে এই নিয়মে ইনকাম করা যায়। যদি আপনি এই নিয়মটি জেনে যান তাহলে আপনিও প্রতি মাসে লাখ টাকা আয় করতে পারবেন।চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। কিভাবে ভিডিও না বানিয়ে ইউটিউব থেকে প্রতিমাসে লাখ ইনকাম করার দুটি উপায় সম্পর্কে।
- রিমিক্স ভিডিও আপলোড করে ইউটিউব থেকে ইনকাম করা যায়
- কপিরাইট ফ্রি ভিডিও আপলোড করে ইউটিউব থেকে ইনকাম করা যায়
রিমিক্স ভিডিও আপলোড করে ইউটিউব থেকে ইনকাম
২০২৪ সাল থেকে ইউটিউব সবাইকে এই সুযোগ দিয়েছেন, অর্থাৎ যে কোন একটি
জনপ্রিয় ভিডিও আপনি যেকোনো সময় রিমিক্স করে আপলোড করে ইউটিউব থেকে ভালো টাকা
ইনকাম করতে পারবেন, তবে এক্ষেত্রে আপনি সর্বোচ্চ এক মিনিট এর ভিডিও আপলোড করতে
পারবেন, এর বেশি আপলোড করলে ইউটিউব নেবে না।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে ভিডিও রিমিক্স কিভাবে করব, কিভাবে তৈরি করলে ভালো
রিমিক্স ভিডিও বানানো যায়। রিমিক্স ভিডিও তৈরি করা খুবই সহজ একটি কাজ, চলুন এই
বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
রিমিক্স ভিডিও আপলোড করার জন্য,প্রথমে আপনার ইউটিউব অ্যাপসটি ওপেন করে নিন, এরপর
আপনার প্রিয় অথবা জনপ্রিয় একটি ভিডিও চালু করুন, এরপর দেখুন যেখানে লাইক কমেন্ট
এবং শেয়ারের অপশন আছে।
সেখানে আরও একটি নতুন অপশন আছে যার নাম হচ্ছে রিমিক্স, রিমিক্স অপশনে একটি ক্লিক
করুন, তারপর দেখুন এখানে চারটি অপশন আসবে, এর মধ্যে থেকে কোলাব অপশনে ক্লিক
করুন, এরপর এখানে একটি এডিটিং অপশন আসবে।
সেখান থেকে আপনি প্রথমেই ডান পাশের কোনায় যেখানে ১৫ এস লেখা আছে সেখানে
ক্লিক করে ৬০এস করে নিন এরপর নেক্সট ক্লিক করুন, এরপর রেকর্ডিং
বাটন আসলে সেখানে ক্লিক করে এক মিনিটের আপনার ফেস সমৃদ্ধ
ভিডিও রেকর্ড করুন, রেকর্ড হয়ে গেলে নেক্সট এ ক্লিক করুন, এরপর ক্যাপশনে
বিস্তারিত লিখে আপলোড দিন।
তৈরি হয়ে গেল আপনার রিমিক্স ভিডিও।এভাবে প্রতিদিন তিন থেকে চারটি ভিডিও আপলোড
করে আপনি প্রতি মাসে ইউটিউব থেকে একটি ভালো পরিমাণ টাকা আয় করতে পারেন। তবে
এক্ষেত্রে চ্যানেলটি অবশ্যই মনিটাইজ থাকতে হবে। তবে যেসব ভিডিও এর মালিক
রিমিক্স এর অপশন রাখেনি সেসব ভিডিও রিমিক্স করা যাবে না।
মনিটাইজ না থাকলে কি করতে হবে আমাদের এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন, আশা করি এর
মধ্যে আপনি মনিটাইজ এর শর্তাবলী পেয়ে যাবেন পেয়ে যাবেন। তাহলে উপরের
আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারলাম কিভাবে রিমিক্স ভিডিও আপলোড করে অর্থাৎ ভিডিও না
বানিয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম করা যায়।
কপিরাইট ফ্রি ভিডিও আপলোড করে ইউটিউব থেকে ইনকাম করা যায়
সারা বিশ্বের অনেকগুলো ওয়েবসাইট আছে যেখান থেকে আপনি সহজেই কপিরাইট ফ্রী
ভিডিও ডাউনলোড করতে পারবেন, এবং সেই ভিডিওগুলো সঠিকভাবে এডিটিং করে ইউটিউবে
আপলোড দিয়ে প্রতি মাসে লক্ষ টাকা আয় করা যায়। আপনিও এখান থেকে নিয়মিত ভিডিও
আপলোড দিয়ে লক্ষ টাকা আয় করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে আপনাকে দেখতে হবে কোন ভিডিওগুলো আপলোড করলে জনগণ পছন্দ করবে। কারণ যদি
আপনি এমন ভিডিও আপলোড করেন যা জনগণের পছন্দ নয় তাহলে সেখান থেকে আপনি কোনভাবেই
ভালো কিছু করতে পারবেন না। জনপ্রিয় কোন ভিডিও পোস্ট করলে আপনার চ্যানেল
দ্রুত রান করবে এবং আপনি অনেক বেশি ইনকাম করতে পারবেন।
কোন কোন ওয়েবসাইট থেকে কপিরাইট ভিডিও আপলোড করা যায় তা কয়েকধাপ নিচে দেওয়া
আছে। ওইসব ওয়েবসাইট থেকে ভিডিও আপলোড করে নিয়মিত পোস্ট করে দেখুন আপনার কত
দ্রুত ইনকাম শুরু হয়। অর্থাৎ ভিডিও না বানিয়ে ইউটিউব থেকে প্রতিমাসে লাখ টাকা ইনকাম করা শুরু হয়ে যায়।
ইউটিউব শর্টস থেকে ইনকাম
কিভাবে ইউটিউব শর্টস থেকে ইনকাম করা যায়। ইউটিউব শর্টস থেকে বেশ কয়েকটি উপায়ে
টাকা ইনকাম করা যায়, অর্থাৎ যদি আপনার একটি ভালো সাবস্ক্রাইবার
সমৃদ্ধ ইউটিউব চ্যানেল থাকে তাহলে সেই চ্যানেল থেকে শর্টস ভিডিও আপলোডের
মাধ্যমে আপনি প্রতি মাসে কয়েক লক্ষ টাকা আয় করতে পারেন।
বর্তমান সময়ে এসে ইউটিউবে সবচেয়ে বেশি ভিউ হয় Shorts ভিডিও, এমনও দেখা যায়
কিছু Shorts ভিডিও আছে যেগুলো ভিউ হয়েছে প্রায় ২০ থেকে ৩০ মিলিয়ন, কারণ
বর্তমান সময়ে এসে লম্বা ভিডিও দেখার মত সময় কারও নেই, তাই বেশিরভাগ মানুষ তার
প্রয়োজনে ও বিনোদনের জন্য শর্টস ভিডিও বেশি দেখে।
প্রতিদিন আপনি যদি দুই থেকে তিনটা শর্ট ভিডিও আপলোড করেন, এবং সেই ভিডিওর গুণগত
মান যদি ভাল হয়, তাহলে আপনার ভিডিও থেকে প্রচুর ভিউ আসবে, যত বেশি ভিউ হবে
তত বেশি আপনার ইনকাম বাড়বে, Shorts ভিডিও থেকে ইনকামের ক্ষেত্রে আপনার
চ্যানেলটিতে অবশ্যই মনিটাইজেশন থাকতে হবে।তাহলে চলুন ইইউটিউব শর্টস থেকে ইনকাম এর
কয়েকটি ধাপ জেনে নেওয়া যাক
ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামঃ ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম হল বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে
টাকা ইনকাম করার একটি পদ্ধতি, অর্থাৎ আপনি শর্টস ভিডিও আপলোড দিবেন সেই ভিডিওতে
বিজ্ঞাপন আসবেএবং সেই বিজ্ঞাপন থেকে আপনাকে পেমেন্ট করা হবে। এভাবে যত
বেশি বিজ্ঞাপন আপনার ভিডিওতে আসবে তত বেশি ইউটিউব শর্টস থেকে ইনকাম
হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার চ্যানেলটির মনিটাইজ থাকতে হবে।
- স্পন্সরশিপঃ ইউটিউব শর্টস থেকে ইনকাম এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম হলো স্পন্সরশিপ। কারন ইউটিউব রেভিনিউ থেকে ইনকাম করা খুবই কষ্টসাধ্য বিষয়। কারণ রেভিনিউ থেকে ইনকাম করতে হলে নিয়মিত আপনাকে ভালো মানের ভিডিও আপলোড করতে হবে। সেই ভিডিও গুলো প্রচুর পরিমাণে ভিউ হলে সেখান থেকে রেভিনিউ পাওয়া যায়।
- স্পন্সরশিপ পেতে হলে আপনাকে প্রচুর ভিউয়ার্স বা সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে এমন কোন কথা নয়, শুধুমাত্র ভালো একটি ফ্যান্ডবেজ থাকলেই হবে। বিভিন্ন ব্র্যান্ড কোম্পানির পণ্য আপনার ভিডিওতে প্রচারের মাধ্যমে আপনি এখান থেকে প্রতি মাসে লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার ভিডিও ভালো ভিউ হলে ওই কোম্পানির পণ্য বিক্রয় হবে এবং ইউটিউব শর্টস থেকে ইনকাম হবে।
- মেম্বারশিপের মাধ্যমে ইনকামঃ আপনার চ্যানেলের যদি মেম্বারশিপ অন থাকে তাহলে ইউটিউব শর্টস থেকে ইনকাম করতে পারবেন। কারণ আপনার গুরুত্বপূর্ণ ভিডিওগুলো আপনার সাবস্ক্রাইবাররা নির্ধারিত পরিমাণ টাকা পরিশোধ করে দেখবে। তবে এক্ষেত্রে এই ভিডিওগুলো অবশ্যই কোন কোর্স বা শিক্ষনীয় ভিডিও হতে হবে।
- সুপার চ্যাট থেকে ইনকামঃ আপনি যখন কোন লাইভ ভিডিও করবেন তখন সেই ভিডিওতে লাইভ দেখার সময় আপনার দর্শকেরা সুপার চ্যাটের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পেমেন্ট করে কমেন্ট করতে পারবে। আর এভাবে কমেন্ট করার মাধ্যমে সুপারচ্যাট থেকে ইনকাম করা যায়। ইউটিউব শর্টস থেকে ইনকাম এর এটি একটি অন্যতম পদ্ধতি।
- প্রিমিয়াম সাবক্রিবশনঃ আপনার ইউটিউব শর্টস ভিডিওর চ্যানেলটি যদি প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশন এর আওতায় আসে, আপনার শর্টস ভিডিও গুলো দেখে দর্শকেরা প্রিমিয়াম সাবক্রিপশন করে। তাহলে সেখান থেকে আপনি ইনকাম করতে পারবেন।
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইউটিউব শর্টস থেকে ইনকামঃ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর কথা আমরা কম বেশি সবাই জানি। অর্থাৎ আপনার শর্টস ভিডিওর ডেসক্রিপশনে যদি কোন কোম্পানির পণ্যর লিংক যোগ করে দেন। এবং সেই লিংকে ক্লিক করে যদি কোন ব্যক্তি কোন পুন্য ক্রয় করে তাহলে আপনি সেখান থেকে নির্ধারিত পরিমাণ কমিশন পাবেন। আর এভাবেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা ইনকাম করা যায় ইউটিউব শর্টস থেকে।
- ইউটিউব কমিউনিটি তৈরি করার মাধ্যমে ইনকাম করাঃ অর্থাৎ যদি আপনি ভাল মানের ইউটিউব শট নিয়মিত ভিডিও করে আপলোড দেওয়ার মাধ্যমে একটি বড় ধরনের তৈরি করতে পারেন। তাহলে এই কমিউনিটির মাধ্যমে আপনার প্রচুর পরিমাণে ভিউয়ার্স বাড়বে এবং এভাবে প্রতি মাসে কয়েক লক্ষ টাকা আয় করতে পারবেন।
- নিজের পণ্য বিক্রয় করে ইনকাম করাঃ ইউটিউব শর্টস এর মাধ্যমে আপনার নিজের পণ্যর বিজ্ঞাপন তৈরি করে সেই বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে অথবা লাইভ ভিডিওতে আপনার পণ্য দেখিয়ে সেই পণ্য বিক্রয় করে ইউটিউব শর্টস থেকে ইনকাম করা যায়। এতে করে একদিকে যেমন বিজ্ঞাপন থেকে ইনকাম হবে অন্যদিকে তেমন পণ্য বিক্রয় করে ইনকাম হবে।
ইউটিউব থেকে মাসে কত আয় করা যায়
ইউটিউব হচ্ছে এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে আয়ের কোন শেষ নেই, অর্থাৎ আপনার
কনটেন্ট যদি ভালো হয়, ভিউয়ারদের পছন্দ হয়, ভিডিওগুলো প্রচুর পরিমাণে ভিউ
হয় এবং আপনি নিয়মিত ভিডিও পোস্ট করেন তাহলে প্রতি মাসে এক লাখ থেকে দশ
লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন। ইউটিউব থেকে আয়ের কোন লিমিটেশন নেই।
এমনও কিছু চ্যানেল আছে যেগুলো প্রতি মাসে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করে
থাকে। এটা নির্ভর করে আপনার চ্যানেলের ক্যাটাগরির উপরে। কিছু ক্যাটাগরি আছে
যেগুলোতে অল্প ভিউয়ে বেশি টাকা আয় করা যায়। আবার কিছু ক্যাটাগরি আছে
যেগুলোতে প্রচুর ভিউ হলে কম টাকা আয় যায়।
আপনার ইউটিউবের ভিডিও যদি আমেরিকা অথবা কানাডা বেজ করে তৈরি করা হয় তাহলে আপনার
ভিডিওতে অল্প ভিডিওতেও অনেক বেশি টাকা ইনকাম করা সম্ভব। যদি আমাদের দেশের ওপর বেজ
করে আপনি ভিডিও তৈরি করেন তাহলে সে ক্ষেত্রে ইনকাম হওয়ার সুযোগ কম থাকে।
যদি এন্টারটেইনমেন্ট ভিডিও হয় তাহলে তাহলে এই ভিডিওগুলো প্রচুর ভিউ হওয়ার সুযোগ
থাকে এবং এখান থেকে অনেক টাকা ইনকাম করার সুযোগ থাকে। যদি সাইন্স এবং টেকনোলজি
বিষয়ক চ্যানেল হয় তাহলে সেখান থেকে অনেক টাকা ইনকাম করা যায়। এককথায় ইউটিউব
থেকে ইনকাম করার শুরু বা শেষ বলতে কোন কিছু নেই।
ভালো গুণগত মান সম্পন্ন ভিডিও পাবলিস্ট করার মাধ্যমে আপনি প্রতি মাসে ২০ লক্ষ
টাকা আয় করতে পারেন আবার ভিডিওর মান যদি খারাপ হয় বা যদি শিক্ষনীয় ভিডিও না
হয় তাহলে সেখান থেকে আপনি খুব ভাল ইনকাম করতে নাও পারেন। তাই এমন ভিডিও তৈরি
করবেন যেখান থেকে মানুষ কিছু শিখতে পারবে এবং সেখান আপনার ইনকাম বাড়বে।
এই কথাগুলো বিশ্লেষণ করলে একটি কথা বলা যায় যে ইউটিউব থেকে নিয়মিত ভালো ভিডিও
পোস্ট করার মাধ্যমে প্রতি মাসে এক লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত আপনি খুব সহজেই
আয় করতে পারবেন।
ইউটিউব মনিটাইজেশন পলিসি
আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি ইনকাম হয় মূলত বিজ্ঞাপন থেকে। আর বিজ্ঞাপন থেকে ইনকাম
করতে হলে আপনার চ্যানেলটি অবশ্যই মনিটাইজেশন থাকতে হবে। বর্তমান সময়ে এসে দুভাবে
আপনার চ্যানেলটিকে মনিটাইজ করতে পারবেন। ইউটিউব চ্যানেল মনিটাৈইজেশন করার সেই
পদ্ধতি দুটি কি কি চলুন এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ইউটিউবের মনিটাইজেশন দুই ভাবে করা যায়
- Shorts ভিডিও এর জন্য মনিটাইজেশন
- পূর্ণাঙ্গ ভিডিও এর জন্য মনিটাইজেশন
Shorts ভিডিও এর জন্য মনিটাইজেশন পলিসি
শর্টস ভিডিও মনিটাইজেশনের জন্য ইউটিউব কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে যে শর্ত দেওয়া
আছে তা হল- ওই চ্যানেলে কমপক্ষে এক হাজার সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে এবং শর্টস
ভিডিও দশ মিলিয়ন ভিউ হতে হবে, সর্বশেষ বারো মাসের মধ্যে, এই শর্ত পূরণ হলে
তবে একজন ইউটিউবার মনিটাইজেশনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
পূর্ণাঙ্গ ভিডিও এর জন্য মনিটাইজেশন পলিসি
পূর্ণাঙ্গ ভিডিও মনিটাইজেশনের জন্য ইউটিউব কর্তৃপক্ষ থেকে যে কন্ডিশন দেওয়া আছে
তা হল-সর্বশেষ ১২ মাসের মধ্যে ১ হাজার সাবস্ক্রাইবার ও ৪ হাজার ঘন্টা ওয়াচ টাইম
হতে হবে, যদি সর্বশেষ ১২ মাসের মধ্যে এই শর্ত পূরণ হয় তাহলেই একজন ইউটিউবার
মনিটাইজেশন এর জন্যআবেদন করতে পারবেন।
তবে প্রথমদিকে এই সর্তপূরন হওয়া খুবই কষ্টকর একটি বিষয়। যদি আপনি ধৈর্যশীল
ব্যক্তি না হোন তাহলে এই পদ্ধতি আপনার জন্য নয়। কারণ প্রথমদিকে আপনার এক
হাজার সাবস্ক্রাইবার ও ৪ হাজার ঘন্টা ওয়াচ টাইম হতে এক বছর বা দু'বছর সময় লাগতে
পারে। অথবা আপনার চ্যানেলের ভিডিওর মান যদি ভাল হয় তাহলে ৬ মাসের মধ্যেও
আপনার চ্যানেলটি মনিটাইজ হতে পারে।
কত ভিউ হলে ইউটিউব কত টাকা দেয়
ইউটিউব চ্যানেলের ভিতরে বিভিন্ন ধরনের ক্যাটাগরি থাকে, যেমন সায়েন্স এন্ড
টেকনোলজি, এডুকেশন, এন্টারটেইনমেন্ট, পিপল ব্লগ ইত্যাদি, এসব ক্যাটাগরির
মধ্যে সাইন্স এন্ড টেকনোলজি বিষয়ে যেসব চ্যানেল বা ভিডিও আছে সেগুলো ১০০০ থেকে
১৫০০ ভিউ হলে এক ডলার ইউটিউব থেকে পেমেন্ট করা হয়।
বাকি যেসব চ্যানেল আছে সেগুলো সাধারণত ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার ভিউ হলে এক ডলার
ইউটিউব এর পক্ষ থেকে পেমেন্ট করা হয়, তবে এগুলো পরবর্তী সময়ে এসে কম বেশি
হতে পারে। তবে সাইন্স এন্ড টেকনোলজি এই বিষয়ের চ্যানেলগুলা খুবই কম ভিউ
হয়। আবার এন্টারটেইনমেন্ট চ্যানেলগুলো প্রচুর পরিমাণে ভিউ হয়।
যদি আপনি সাইন্স এন্ড টেকনোলজি বিষয়ে চ্যানেল খুলতে পারেন এবং নিয়মিত ভিডিও
আপলোড করতে পারেন তাহলে এখান থেকে ইনকাম হওয়ার সুযোগ অনেক বেশি থাকে। কারণ এই
ভিডিওগুলো মানুষের সারা জীবন প্রয়োজন হয়। তাই আমার মনে হয় এই ক্যাটাগরি থেকেই
বেশি টাকা ইনকাম করা সম্ভব। এবং এই ক্যাটাগরি থেকেই ইউটিউব বেশি টাকা পেমেন্ট
দেয়।
কপিরাইট ফ্রি ভিডিও কোথায় পাবেন
সারা বিশ্বে এমন অনেক ওয়েবসাইট আছে যেখান থেকে আপনি কপিরাইট ফ্রি ভিডিও সংগ্রহ
করতে পারেন, এবং এই ভিডিওগুলো খুব ভালোভাবে এডিটিং ও মডিফাই করে ইউটিউব চ্যানেলে
পোস্ট করে, প্রতিমাসে ভালো পরিমাণ টাকা আয় করতে পারেন। এসব ওয়েবসাইট থেকে আপনি
ভালো মানের ভিডিও গুলো নিয়ে আপনার চ্যানেলে আপলোড করলে আপনার চ্যানেল দ্রুত
গ্রো করতে পারে।
চলুন জেনে নেই কোন কোন ওয়েবসাইট থেকে কপিরাইট ফ্রি ভিডিও পাবেন।
- Pexels
- Pixabay
- Videovo
- Videozy
- Cover
- Mixkit
- Motion Array
- Shutterstock
- Adobe Stock
ইউটিউব থেকে আয় করার পাঁচটি উপায়
আপনার যদি একটি মনিটাইজেশন অন ইউটিউব চ্যানেল থাকে তাহলে আপনি সেই চ্যানেল
থেকে পাঁচটি উপায়ে টাকা ইনকাম করতে পারবেন, এই পাঁচটি উপায়ে আপনি
প্রতি মাসে কয়েক লক্ষ টাকা আয় করতে পারবেন। চলুন জেনে নেই সেই পাঁচটি উপায় কি
কি?
-
একটি ইউটিউব চ্যানেলে মনিটাইজেশন অন থাকলে সেখানে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞাপন
দিয়ে থাকে, যে চ্যানেলে যত বেশি বিজ্ঞাপন দেখাবে সে চ্যানেল থেকে তত বেশি
ইনকাম করা সম্ভব হবে।
-
মনিটাইজেশন ইউটিউব চ্যানেলে একটি সুপার নামে অপশন থাকে, যেখান
থেকে আপনার একজন সাবস্ক্রাইবার ইচ্ছা করলে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিয়ে
সুপার এর মাধ্যমে আপনার ইউটিউব চ্যানেলে টাকা ইনভেস্ট করবেন তার
লাভের আশায়, আর আপনি সেখান থেকে ইনকাম করতে পারবেন।
-
ইউটিউব চ্যানেলে shorts video আপলোড করে সেখান থেকে প্রতি মাসে অনেক টাকা আয়
করা যায়।
-
মনিটাইজেশন প্রাপ্ত ইউটিউব চ্যানেলে শপিং নামে একটি অপশন থাকে, যেখানে
বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পণ্য আপনার ইউটিউব চ্যানেলের সাথে
কানেক্ট করে, সেই পণ্য বিক্রি করার মাধ্যমে আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণে একটি
কমিশন পেতে পারেন।
-
এছাড়া আপনার চ্যানেলের যদি প্রচুর পরিমাণে সাবস্ক্রাইবার ও ভিউয়ার্স থাকে,
তাহলে বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানির স্পন্সর নেওয়ার মাধ্যমে এবং সেই কোম্পানির
পণ্যগুলো প্রচারের মাধ্যমে আপনি ইউটিউব থেকে প্রতি মাসে লাখ টাকা পর্যন্ত আয়
করতে পারেন।
যেভাবে ভিডিও আপলোড করলে ইউটিউব থেকে টাকা আয় করতে পারবেন
ইউটিউব থেকে টাকা ইনকামের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, আপনি কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি
না করেই প্রতিমাসে লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন, আর এর জন্য আপনাকে কিছু
নিয়ম মেনে চলতে হবে, বিশেষ করে ভিডিও আপলোড এর ক্ষেত্রে, সেই নিয়ম হল প্রতিদিন
কমপক্ষে একটি ভিডিও আপনাকে আপলোড করতে হবে।
যদি একের অধিক করতে পারেন তাহলে খুবই ভালো কিন্তু কোনভাবেই মাঝখানে একদিন বা
দুইদিন মিস করা যাবে না, যদি আপনি মিস করেন তাহলে ওই চ্যানেলটি ডাউন হয়ে যাবে আর
ভালো ভিউ হবে না, আর যদি একবার ডাউন হয়ে যায় তাহলে ওখান থেকে ভালো ইনকাম করা
কোনভাবেই সম্ভব নয়।
তাই ইউটিউবে ১০০% সফল হতে হলে আপনাকে প্রতিদিন ভিডিও আপলোড করতে হবে, সেই ভিডিওটি
হতে হবে কোয়ালিটি সম্পন্ন, তাহলে নিশ্চিত ভাবে আপনি ইউটিউব থেকে প্রতি মাসে লাখ
টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন।
লেখকের মন্তব্যঃ ইউটিউবে ইনকাম ভিডিও না বানিয়ে
ভিডিও না বানিয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম করার জন্য যে পদ্ধতি বলা হল এটা খুবই
উত্তম একটি পদ্ধতি, এই পদ্ধতিতে আপনি প্রতি মাসে লক্ষ টাকা আয় করতে পারবেন।
তবে এটি দীর্ঘস্থায়ী কোন পদ্ধতি নয়, অর্থাৎ রিমিক্স ভিডিও তৈরি করে আপনি প্রতি
মাসে টাকা ইনকাম করতে পারবেন, কিন্তু এটা এক সময় যেকোনো কারণে বন্ধ হয়েও যেতে
পারে।
তবে এক্ষেত্রে আমার পরামর্শ হচ্ছে, আপাতত আপনার চ্যানেলটাকে ড্র করার জন্য। এবং আপনার ইনকাম শুরু হওয়ার জন্য আপনি এই পদ্ধতিটি অবলম্বন করতে পারেন। তবে আপনারা নিজে ভিডিও তৈরি করে নিয়মিত
পোস্ট করুন, আশা করি দীর্ঘদিন আপনারা এখান থেকে ভালো পরিমাণ আপনি টাকা আয়
করতে পারবেন।
এট্রাকশন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url